হেগ: মহাভারতে (Mahabharata) রাজা ধৃতরাষ্ট্রের ১০১ সন্তান (১০০ ছেলে এবং এক মেয়ে) ছিল। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের (Netherlands) এই ব্যক্তি ৫৫০ থেকে ৬০০ সন্তানের বাবা। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। তবে ঠিক ধৃতরাষ্ট্রের স্টাইলে নয়, বীর্যদান (Sperm Donation) করে এত সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এতে ঘটেছে বিপত্তি। ডাচ আদালত তাঁকে আর বীর্যদান করতে বারণ করেছে, আর এই রায় অমান্য করলে জরিমানা দিতে হবে এক লক্ষ ইউরো (৯০,৪৭,৬৫১ টাকা)।
ওই ব্যক্তির নাম জোনাথন জেকব মেইজের (Jonathan Jacob Meijer), বয়স ৪১। সমস্ত ঘটনা সামনে আসে তাঁর বিরুদ্ধে এক মহিলা হেগ (Hague) শহরে আইনি পদক্ষেপ করার পর। এই মামলার বিচারক জানিয়েছেন, বাবা-মায়েদের নিজের সন্তান সংখ্যার ব্যাপারে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন মেইজের। বিচারক বলেন, বাবা-মায়েরা এখন যে বিষয় নিয়ে চিন্তিত তা হল, তাদের সন্তানরা সবাই আত্মীয়তার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। কারণ একই পিতার বীর্য থেকে তাদের জন্ম। এমনটা বাবা-মায়েরা চাননি। মেইজেরের বীর্যদান এখন থেকে তাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Missile and Drone Attack | রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে হত ১৭
এমনকী বীর্যদানে ইচ্ছুক ছিলেন এমন ভাব নিয়ে কোনও দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারবেন না মেইজের। নিজে এবং কোনও সংস্থার হয়ে বীর্যদানের বিজ্ঞাপনও দিতে পারবেন না।
এ পর্যন্ত ১৩টি ক্লিনিকে বীর্যদান করেছিলেন মেইজের তার মধ্যে ১১টিই নেদারল্যান্ডসের। নেদারল্যান্ডসের স্বাস্থ্য দফতরের গাইডলাইন অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির উচিত সর্বোচ্চ ১২ জন মহিলাকে বীর্যদান করা। সেই সঙ্গে ২৫-এর বেশি সন্তানের বাবা হওয়া উচিত নয়। তার বেশি হলে শিশুদের মধ্যে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। একজন শিশু যদি জানে তার শয়ে শয়ে ভাইবোন রয়েছে, সে মানসিক চাপে পড়বেই।
তবে এসব গাইডলাইনের তোয়াক্কাই করেননি মেইজের। ২০০৭ সালে বীর্যদান শুরু করেন তিনি এবং ২০১৭ সালে নেদারল্যান্ডসের ক্লিনিকে তাঁর বীর্যদান নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তাঁকে থামানো যায়নি, বিদেশে এবং অনলাইনে বীর্যদান শুরু করেন। এখন দেশ-বিদেশে তাঁর সন্তানের সংখ্যা প্রায় ৬০০। অবশেষে মেইজেরের বাবা হওয়ার ‘অভ্যাস’ বন্ধ করল আদালত। এক সন্তানের মা জানিয়েছেন, এই রায়ে আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞ তিনি। অন্যদিকে মেইজেরের আইনজীবী জানিয়েছেন, যে সমস্ত দম্পতি সন্তানধারণে অক্ষম তাঁদের সাহায্য করতে চেয়েছিলেন তাঁর মক্কেল। পেশায় মিউজিশিয়ান মেইজের এখন কেনিয়ায় থাকেন।