কলকাতা: দলের একাংশের দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূলের প্রবীণ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সোমবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র খড়দহের ঘোলা মহিষপোতায় দলের এক সভায় তিনি বলেন, এক সময় যে বাসের কন্ডাক্টর ছিল, সে আচমকাই ৫০ বিঘা জমির মালিক হয়ে যায় কী করে। টিভি খুললেই দেখা যাচ্ছে, এখানে টাকা, ওখানে টাকা। টিভি খোলা যাচ্ছে না। মন্ত্রী পরিষ্কার বলে দেন, আমার দলের যে সব লোক বা নেতা অন্যায় করছেন, তাঁদের দায়িত্ব আমরা নেব না। অনেকেই ধরা পড়ছে।
প্রবীণ মন্ত্রী বলেন, আমি কখনও কোনও উপহার নিই না। কারও কাছ থেকে এক পয়সা নিই না। আমি চাই না, আমার গায়ে কেউ কালো দাগ ছিটিয়ে দিক। আমি চাই না, আমাকে ব্যবহার করে কেউ তার নিজের সম্পদ বাড়িয়ে নিক। ভোটারদের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, আমাকে আপনারা ভোট দিলেন। অথচ দেখলেন না, আমার চালচলন কেমন। আমি যদি আমার ক্ষমতা দেখিয়ে সম্পদ বাড়ানোর চেষ্টা করি, সেটা কি ভালো হবে? বাসের কন্ডাক্টর থেকে আমি যদি ৫০ বিঘা জমির মালিক হয়ে যাই, মানুষ কী ভাববে।
এদিন শোভনদেব কারও নাম করেননি বটে। কিন্তু বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলরাই। তাঁদের নিয়ে দল যে চরম অস্বস্তিতে রয়েছে, তাও পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে প্রবীণ মন্ত্রীর ভাষণে। তিনি বলেন, ৩১ বছর ধরে আমি বিধায়ক আছি। খড়দহে পাঁচ বছর থাকব। তারপর চলে যাব। আমি এই পাঁচ বছর কাজ করতে চাই। আমি চাই না, আমার নাম করে কেউ টাকা নিক। আপনারা কাউকে এক পয়সা দেবেন না।
দুর্নীতি এবং গরু, কয়লা পাচার কাণ্ডে পার্থ-অনুব্রতর মতো হেভিওয়েট নেতারা গ্রেফতার হওয়ার পর শাসকদলের কোনও নেতা বা মন্ত্রী এই ভাষাতে কথা বলেননি। এমনিতেই শোভনদেব অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন বলে দলের অন্দরে তাঁর একটা আলাদা ভাবমূর্তি রয়েছে। এদিন তাঁর ভাষণ চলাকালীন ঘনঘন হাততালি পড়ে।