কলকাতা: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে সিবিআইকে আরও গতি বাড়াতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সিবিআইকে দুসপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছেন। এদিন বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআই তদন্তে রীতিমতো অসন্তুোষ প্রকাশ করেন। এজলাসেই তদন্তকারী অফিসারকে ডেকে তিনি বলেন, তদন্তে আরও গতি চাই।
এদিন বিচারপতি আরও নির্দেশ দেন, ইডির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে সিবিআইকে তদন্ত চালাতে হবে। তিনি বলেন, দুসপ্তাহ সময় দিচ্ছি তার মধ্যে তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি রাখুন। তদন্তে আরও কিছুর প্রয়োজন হলে আমি নির্দেশ দেব ফ্রেবুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে।
আরও পড়ুন: Teacher Transferred: বদলি হওয়া শিক্ষিকাকে যেতে দিতে নারাজ, চোখের জলে পায়ে পড়ল পড়ুয়ারা
এদিন সিবিআইকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি আরও বলেন, এক-এক সময় মনে হয় এটা কী হচ্ছে! আমি বা আমার মতো অনেকেই এরকম ভাবছেন, এটা কী হচ্ছে! প্রাথমিকের তদন্ত কী পর্যায়ে আছে এখন ?
বিচারপতি সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারকে জিজ্ঞাসা করেন, তদন্তে নেমে কতজনের পাসপোর্ট পরীক্ষা করেছেন? কতবার তাঁরা বাইরে গিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখেছেন? সিবিআই জানায়, তার জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হবে। তখন বিচারপতি বলেন, আপনার কি মনে হয় পাসপোর্ট জাল করা সম্ভব? আমার তো মনে হয়, এটা সম্ভব। বেনামি পাসপোর্ট হয়। খুব সাবধানে কাজ করতে হবে আপনাদের। বেনামে একাধিক পাসপোর্ট থাকতে পারে। খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।
এদিকে এদিনই ২০১৪ সালের টেটের ওএমআর মূল্যায়নের বরাত প্রাপ্ত সংস্থার কাছ থেকে তালিকা নিয়ে নম্বর বিভা্জন বুঝে নেন বিচারপতি। তালিকা দেখে তাঁর প্রশ্ন, কত টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়েছে, তালিকায় সেই কলাম কোথায়? প্রার্থী কটা ভুল উত্তর দিয়েছে তার উল্লেখ কোথায়? সিবিআই আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, তদন্ত শেষ হলে বুঝতে পারবেন দুর্নীতি কতটা গভীরে। পুরো বিষয়েই ফাঁকি রয়েছে। এমন একটা তালিকা দেওয়া হয়েছে, যেখানে ঠিকুজি কুষ্ঠি সব আছে। শুধু বাবার নাম নেই। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে গাজিয়াবাদের ওই সংস্থার কাছ থেকে বিচারপতি হলফনামা তলব করেন। ওই সংস্থা জানায়, ২২০৮ জনের একটা অতিরিক্ত প্যানেল তৈরি করা হয়েছিল ২০১৭ সালে। অন্তত ১২ বার এই প্যানেল বদল করা হয়েছে। বিস্মিত বিচারপতি বলেন, এটা তো নতুন তথ্য। কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়ছে।