কলকাতা: সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির ঠাকুরনগরে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রায় তিন লক্ষ মানুষের হাতে সরকারি পরিষেবা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চ থেকেই সিপিএমের (CPM) বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। একইসঙ্গে নন্দীগ্রাম (Nandigram) প্রসঙ্গ টেনে নাম না করে শুভেন্দুকে গদ্দার বলে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। মঞ্চ থেকেই কটাক্ষের সুরে মমতা বলেন, নন্দীগ্রামে যেদিন গুলি চলে সেদিন গদ্দাররা বাড়িতে বসে ছিল। আমি সেদিন নন্দীগ্রামে ছুটে এসেছিলাম। আমি অনশনে বসেছিলাম। আমার গাড়ি আটকে পেট্রোল বোমা ছোড়া হয় বলে দাবি করেন মমতা।
এদিন সভামঞ্চে রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম না বললেও, নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ তুলে তাঁকেই গদ্দার বলে আক্রমণ শানান মমতা। তিনি বলেন, অপারেশন সূর্যোদয়ের সময় গদ্দার নন্দীগ্রামে ছিল না। আমি সেদিন নন্দীগ্রামে ছুটে এসেছিলাম। নন্দীগ্রামে কোনও আঁচড় লাগেনি বাবুর গায়ে। আমি ছেড়ে যাওয়ার লোক নই বলেও হুঁশিয়ারি দেন মমতা।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari | শর্তসাপেক্ষে শুভেন্দুকে চন্দ্রকোণায় সভার অনুমতি আদালতের
একইসঙ্গে এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে মমতা বলেন, বিজেপি বেইমান-লুটেরার দল। বাংলায় বিজেপি অশান্তি করার চেষ্টা করছে। যারা সিপিএম ছিল, তারাই আজ বিজেপি। সিপিএমের হার্মাদরা এখন বিজেপির (BJP) ওস্তাদে পরিণত হয়েছে। এদিন বিজেপির রামনবমীর মিছিল প্রসঙ্গে মমতার প্রশ্ন, রামনবমীর মিছিল পাঁচদিন আগে কেন? অনুমতি না থাকলেও কেন মিছিল?
পাশাপাশি বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রসঙ্গে ফের আক্রমণ করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার কোনও টাকা দিচ্ছে না। গদ্দারদের টাকায় রাজ্যের রাস্তা হচ্ছে না। রাজ্যের টাকায় রাজ্যের রাস্তা হচ্ছে। রাস্তা তৈরির কাজে ১০০ দিনের শ্রমিকেরা থাকবে। কেন্দ্রীয় দলের কাছে ১০০ দিনের টাকা চান।
উল্লেখ্য, সামনেই রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে। তার আগে শাসকদলের নিয়েগ দুর্নীতি সহ একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখে আন্দোলনে নেমেছে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি। এই পরিস্থিতিতে অনেকটাই কোনঠাসা তৃণমূল। রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলের নেতানেত্রীদের। সে কথা মাথায় রেখে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে জেলা সফরে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাদ্য়ায়। সোমবার খেজুরি থেকে দলীয় কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে পথে নেবে লড়াইয়েরও বার্তা দেন নেত্রী। এমনকী আগামী পঞ্চায়েত ভোটে তাঁর উপর ভরসা করারও আহ্বান জানান মমতা। রাজনৈতিক মহলের মতে, আাগমী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২০২১-এর পথে হেঁটে মমতাকেই সামনে রেখে নির্বাচনে লড়তে চাইছে তৃণমূল। যদিও তৃণমূল তাদের দুর্নীতিকে পিছনে রেখে পঞ্চায়েতে কতটা ভালো ফল করতে পারে তা সময়ই বলবে।