কলকাতা: ফের রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাত চরমে। নতুন রাজ্যপাল হিসেবে সি ভি আনন্দ বোস (C V Ananda Bose) দায়িত্ব নিয়ে রাজ্যে আসার পর নবান্নের (Nabanna) সঙ্গে সম্পর্কটা ঠিক চললেও, কখনও কখনও দুপক্ষের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে দেখা গিয়েছে।
ফের সেই দূরত্বের জল্পনা বাড়িয়ে দিয়ে শুক্রবার নয়া নির্দেশ জারি করেন রাজ্যপাল। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যকে সরাসরি রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। এছাড়াও কোনও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং সেই সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত তথ্য দিতে হবে রাজভবনকে। বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজ্যপালের এই চিঠি দেওয়া নিয়ে এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বেশ কড়া ভাষায় বলেন, এই চিঠির কোনও আইনি ভিত্তি নেই।
আরও পড়ুন: Didir Suraksha Kawach | পথে নামতে চলেছে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমরা আইনি পরামর্শ নিচ্ছি। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্বশাসন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সেটা বারবার বলছেন। আমি রাজ্যপালকে ওই চিঠি প্রত্যাহারের কথা বলব। চিঠির আইনি বৈধতা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আমাদের না জানিয়ে অন্ধকারে রেখে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, আমাদের আমরা উচ্চ শিক্ষা দফতর বনাম রাজভবন নয়। আমরা দ্বৈরথ চাই না। যেটা বলার কথা সেটা স্পষ্ট করে বলুন। গোপাল গান্ধী বা ধনখর মুখে সরাসরি বলে দিতেন। আবার কেসরিনাথ ত্রিপাঠী ও এম কে নারায়ণন খুব একটা বলতেন না। কিন্তু উনি কী বলতে চাইছেন সেটাই স্পষ্ট নয় বলে জানান ব্রাত্য।
প্রসঙ্গত, রাজ্যপালের এদিনের ওই নির্দেশিকায় রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরাসরি রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি প্রত্যেক উপাচার্যকে একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। সেই ফোন নম্বরের মাধ্যমে সরাসরি তাঁরা রাজভবন এবং রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। চিঠিতে জানানো হয়েছে, প্রতিমাসে উপাচার্যদের রাজভবনে গিয়ে আচার্যের অর্থাৎ রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করতে হবে। এছাড়াও তাঁদের জমা দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত সব তথ্য। পাশাপাশি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করতে পারবেন উপাচার্যরা। এই নির্দেশিকা নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের নতুন করে সংঘাতের সূচনা বলেই মনে করছেন অনেকে। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী প্রাক্তন তথা বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সময় রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের পদে পদে বিরোধ তৈরি হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল উপাচার্য নিয়োগ পদ্বতি। যা নিয়ে সরকার ও রাজভবনের মধ্যে চরম সংঘাতের সৃষ্টি করেছিল। এবার ফের একবার সংঘাতের মুখোমুখি হতে চলেছে রাজ্য ও রাজ্যপাল। তবে এই সংঘাতের জল কত দূর গড়ায়, তা সময়ই বলবে।