কলকাতা: রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে (Governor CV Ananda Bose) সীমারেখার কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তিনি সোমবার নবান্নে (Nabanna) বলেন, সকলের একটা সীমারেখা মেনে চলা উচিত। এদিনই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Rabindra Bharati University) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আনন্দ বোস বলেন, আইনশৃঙ্খলা, রাজনীতি, সংবিধান সংক্রান্ত সংকট দেখা দিলে রাজ্যপাল হিসেবে আমি শেক্সপিয়রের হ্যামলেটের মতো হাতে হাত দিয়ে চুপ করে বসে থাকতে পারি না। এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যপাল চুপ করে বসে থাকবেন না তো কী করবেন। সকলের চাকরি খাবেন? সকলেরই সীমারেখা মেনে চলতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যপালের চেয়ারকে আমি সম্মান করি। তিনি রাজ্য সরকারের বিল আটকে রেখেছেন। রাজ্যপালকে আচার্য করার নিয়ম যখন হয়েছিল, তখন ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখন ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। অনেক সমস্যা রয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার জন্য বিধানসভায় বিল পাশ করানো হয়েছে। সেই বিল রাজভবনে রয়েছে। আমি চাই, তিনি হয় বিল সই করুন, না হলে সেটি ফেরত পাঠিয়ে দিন। তাঁর অভিযোগ, উচ্চশিক্ষায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্বশাসিত সংস্থা। সেগুলি চালায় উচ্চশিক্ষা দফতর।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | Cyclone Mocha | ‘মোকা’ মোকাবিলায় প্রস্তুত নবান্ন, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, আমি পর্যন্ত সে ব্যাপারে কোনও হস্তক্ষেপ করি না। কিন্তু রাজভবন হস্তক্ষেপ করেছে। উপাচার্যদের বলা হচ্ছে, সাতদিন অন্তর রাজভবনে রিপোর্ট দিতে হবে। উপাচার্যরা বিশ্ববিদ্যালয় চালাবেন না, রাজভবনে গিয়ে রিপোর্ট দেবেন?
সম্প্রতি রাজ্যপাল এক নির্দেশিকা জারি করে বলেন, এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে উপাচার্যদের সাতদিনের রিপোর্ট দিতে হবে তাঁর কাছে। এছাড়া আর্থিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে উপাচার্যদের রাজ্যপালের সম্মতি নিতে হবে। এই দুই নির্দেশিকাকে ভালোভাবে নেয়নি রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) আগেই রাজ্যপালকে এই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিতে অনুরোধ করেন। রাজ্যপাল কিছুদিন আগে রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করা শুরু করেন। তাতেও আপত্তি জানায় রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য ছিল. উনি মত্ত হস্তীর মতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। সেসব না করে তিনি বরং রাজ্যের বিল ছেড়ে দিন।
রাজ্যপাল এই প্রসঙ্গে বলেন, আমি আরও বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করব ভবিষ্যতে। জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) রাজ্যপাল থাকাকালীন উপাচার্যদের বৈঠক ডাকতেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের নির্দেশ ছিল, কোনও উপাচার্য যেন রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে না যান। এমনও হয়েছে, রাজ্যপাল আসর সাজিয়ে বসে রয়েছেন, কিন্তু কোনও উপাচার্য বৈঠকে হাজির হননি।