কলকাতা: দুর্ঘটনায় জখম এক যুবকের চিকিৎসা না হওয়ায় এসএসকেএম হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বলেন, সিপিএম আমলে হলে এক মিনিটে রোগী ভর্তি করতাম। আমরা ক্ষমতায় আসার পর যদি এই হাল হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে। তিনি এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে বলেন, এই হাসপাতালকে বয়কট করার ডাক দিচ্ছি। নো টু পিজি। তাঁর আরও অভিযোগ, এই হাসপাতালে দালালরাজ কায়েম হয়েছে। ট্রমা সেন্টারে ১০ হাজার, ২০ হাজার, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে রোগী ভর্তি হয়। তিনি বলেন, এই ট্রমা সেন্টার কোনও বাবা, দাদার নয়, জনগণের। হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানান, হাসপাতালে কোনও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। গতকাল রাতে যা হয়েছে, তা সিসিটিভির ফুটেজে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলতে বলেছেন। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালের পাশেই রয়েছেন। শুক্রবার রাতে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সদের হেনস্তা করা হয়েছে।
পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম এক যুবকের চিকিতসা নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। ওই যুবকের দিদি এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে পড়ে ডাক্তার হয়েছেন। পরিবারের তরফ শুভময় পাল নামে ওই যুবককে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য মদনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শুক্রবার রাতে মদন হাসপাতালে গিয়ে হম্বিতম্বি করেন। তিনি নিরাপত্তারক্ষীদের বলেন, রোগীকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি কেন। মেডিক্যাল অফিসারকে ডাকুন। ডিরেক্টর, এমএসভিপি মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ফোন ধরেননি। তিনি আমাকে আক্ষেপ করে বলেন, এত রাতে ফোন করলে কেউ ধরবে না।
মদন বলেন, উল্টে অরূপ বিশ্বাসকে বলা হয়েছে, রোগীকে নাকি দেখা হয়েছে। আসলে কিছুই হয়নি। এরপরই তিনি রোগীর পরিজনদের বলেন, আপনারা অন্য জায়গায় নিয়ে যান। দরকার হলে আমি ঘড়ি, আংটি বিক্রি করে চিকিতসা করাব। সিপিএম আমল হলে এক মিনিটও লাগত না রোগী ভর্তি করতে। রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠিয়ে দিতাম। কামারহাটির বিধায়ক মদন বলেন, আমি মদন মিত্র বলছি। জনগণকে বলছি, সে নো টু পিজি হাসপাতাল। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই। তিনি রোগীর আত্মীয়দের আরও বলেন, যদি মাঝপথে রোগীর মৃত্যু হয়, তবে মেডিক্যাল অফিসারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা করুন। আমি নিজে মামলা লড়ব।
শনিবার ওই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের অধিকর্তা জানান, গত রাতের ঘটনা নিয়ে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। তিনি জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলতে বলেছেন। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে তৃণমূস রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘ দিন মদন মিত্র এসএসকেএম হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন। পাশাপাশি তিনি একাধিকবারএই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।