কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বাড়িতে পোস্টার লাগানোর জন্য ক্ষমা চাইলেন ছয় আইনজীবী। তাঁরা শুক্রবার রীতিমতো হলফনামা দিয়ে এজলাসে দুঃখ প্রকাশ করেন। আদালত ওই আইনজীবীদের অব্যাহতি দিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁদের সতর্ক করে বলা হয়, ভবিষতে যেন কেউ এ ধরনের কাজ না করেন। প্রধান বিচারপতি টি এস শিভগননম আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, আইনজীবীদের রাজনৈতিক মতামত থাকতেই পারে। কিন্তু যখন তাঁরা আইনজীবীর গাউন পড়েন, তখন তাঁদের রাজনৈতিক সত্তা দূরে সরিয়ে রেখে আইনজীবী পরিচয়ে কাজ করা উচিত। তিনি আরও বলেন, শনিবার রবিবার আপনারা রাজনীতি নিয়ে নিয়ে চিৎকার করুন আপত্তি নেই , কিন্তু সপ্তাহের বাকি পাঁচ দিন কাজের দিনে মন দিয়ে আইনজীবীর ভূমিকা পালন করুন।
গত ১০ জানুয়ারি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটের দাবিতে একদল আইনজীবী আদালতে বিক্ষোভ দেখান। এজলাসের দরজা আটকে তাঁরা কাজে ইচ্ছুক আইনজীবীদের ঢুকতে বাধা দেন। বিচারপতির এজলাস বয়কটের দাবিতে হাইকোর্ট চত্বরে প্রচুর পোস্টার পড়ে। তার আগের রাতে বিচারপতির যোধপুর পার্কের বাড়ির সামনেই একই ধরনের পোস্টার পড়ে। আইনজীবীদের অভিযোগ ছিল, বিচারপতি মান্থা তাঁর বিভিন্ন রায়ে শাসকদলকে বিপাকে ফেলার এবং বিরোধী নেতাকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই অভিযোগকে সামনে রেখেই আইনজীবী একাংশ বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কট করেন বেশ কিছুদিন ধরে। এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বিচারপতি শিভগননমের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন বিষয়টির তদন্তের জন্য। ওই বেঞ্চ কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছিল। কিন্তু সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়নি আদালত। পোস্টার-কাণ্ডে কারা জড়িত, পুলিশ তাঁদের খুঁজে বের করতে পারেনি। বৃহত্তর বেঞ্চে তার জন্য সিপিকে ভর্ৎসনাও করেন।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | মমতার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে পঞ্চায়েতে প্রার্থী দেবে না আপ
শুক্রবার ওই মামলারই শুনানিতে সংশ্লিষ্ট ছয় আইনজীবী হলফনামার মাধ্যমে এজলাসে ক্ষমা চান। বেঞ্চের অন্যতম সদস্য বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, হাইকোর্টের বারের মর্যাদা রক্ষার দিকে নজর দিতে হবে। এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে সেই দিকেও খেয়া রাখতে হবে।