কর্নাটক: কথায় আছে ইতিহাস যেন বারবার ফিরে ফিরে আসে। সত্যি সত্যি ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করবে ১৩ মে। আজ থেকে ঠিক বারো বছর আগে ৩৪ বছরের বাম শাসনকে পরাস্ত করে বাংলার ক্ষমতা দখল করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক যুগ পর ঘুরে ফের এল এই দিনটা। এবার বাংলা নয়, কর্নাটক। বিজেপিকে কার্যত পর্যুদস্ত করে কুর্সিতে বসতে চলেছে কংগ্রেস। সরকারিভাবে ফল ঘোষণা না হলেও গণনার ট্রেন্ডে স্পষ্ট, বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্বাইয়ের পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়া কার্যত সময়ের অপেক্ষা। ১০০-রও গণ্ডি পেরোতে পারল না বিজেপি। দক্ষিণ ভারত থেকে কার্যত তারা সাফ হয়ে গেল। এই জয় পেতেই উচ্ছ্বাসে মেতেছেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। হয়তো একটু বেশিই উচ্ছ্বাস, কারণ হাত শিবির বুস্ট পেল বইকী! রাহুল গান্ধী প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, এই জয় পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জয়, ভালোবাসার জয়।
২০১১-র ১৩ মে-তেও একটি বিষয় দেখা গিয়েছিল। মমতা-ঝড়ে বাম সরকারের ২৯ মন্ত্রীর হার হয়েছিল। সেখানে হেরেছিলেন খোদ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও। কর্নাটকের পালাবদলেও সেই ট্রেন্ড অব্যাহত থাকল। বিজেপির একডজন মন্ত্রীর হার হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন গোবিন্দ কারাজোলা, শ্রীরামুলু, সোমান্না,মধুস্বামী, মুর্গেশ নিরানি, বিসি পাতিল, সুধাকর, এমটিবি নাগরাজ, কেসি নারায়ণগৌড়া, বিসি নাগেশ এবং শঙ্কর পাতিল। তবে সিগ্গাও থেকে ৩৫ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতে মুখ বাঁচিয়েছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। লোকসভা ভোটের আগে এই হারে বিজেপি বেকায়দায় তো অবশ্য়ই, কিন্তু এক ডজন মন্ত্রীর হারে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ল মোদী-ম্যাজিক।
আরও পড়ুন: Karnataka Assembly Election | সভাপতি হিসেবে পরপর দুই রাজ্যের নির্বাচনে সফল মল্লিকার্জুন খাড়্গে
আসলে কর্নাটকের বিজেপি নেতারা হয়তো একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তাঁরা হয়তো ভেবেছিলেন রাজ্য প্রশাসন ও মোদী-শাহ-নাড্ডাদের মুখ দেখিয়েই ভোটের বৈতরণী পার হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তব থেকে দূরে থাকা গেরুয়া শিবির ঘুণাক্ষরেও হয়তো টের পায়নি জনমানসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, জাতপাতের রাজনীতির মতো ইস্যুগুলি নিয়ে তিতিবিরক্ত সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে, এই জয় হয়তো কংগ্রেসের দরকার ছিল। অন্তত একটা শক্তপোক্ত বিরোধী মুখের জন্য। কর্নাটক কংগ্রেসের সভাপতি শিবকুমারের চোখে দেখা গিয়েছে আনন্দাশ্রু। এই জয় সকল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের উৎসর্গ করেছেন তিনি।