কলকাতা: কিছু রক্তপিপাসু দালাল রক্তের লোভে আমার পিছনে ছুটছে বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। মঙ্গলবার প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলার প্রসঙ্গে এজলাসে বসে বিচারপতি বলেন, আমার লড়াই শুধুমাত্র দুর্নীতি বা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সীমাবদ্ধ নেই। রক্তপিপাসু দালালরাও মাঠে নেমে পড়েছে। দুর্বৃত্তরা আইন রক্ষার নামে দুর্নীতি এবং দুর্নীতিবাজদের সাহায্য করছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।
বিচারপতি এদিন প্রাথমিকের টেট পরীক্ষার (Primary TET Exam) ডিজিটাল ওএমআর শিট নিয়ে বেশকিছু মামলা অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি করে দেন। একক বেঞ্চের বিচার পক্রিয়া চলবে কিনা তা জানতে চেয়ে বিচারপতির পদক্ষেপ। তিনি দুই মামলাকারীকে সুপ্রিম কোর্ট আবেদন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, শীর্য আদালত সবুজ সংকেত দিলে আমি বিচারের কাজে হাত দেব। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের উপর আমার বিশ্বাস, আস্থা এবং শ্রদ্ধা রয়েছে। তার আরও অভিযোগ কিছু মানুষ এখনও কুৎসা এবং অপপ্রচার চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন:Howrah Incident | ৪ দিন পর শিবপুরে ফরেন্সিক দল
বিচারপতি বলেন, ভারতের আইন সভ্য আইন। প্রাথমিকের নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা আছে। তার জন্য কিছুটা হয়তো সময় লাগছে। কিন্তু বিচার হবে।
এর আগেও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন সময় বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তবে মঙ্গলবার যে ভাষায় তিনি কথা বলেছেন, তা আগে কখনও শোনা যায়নি। বস্তুত, তাঁর নির্দেশেই বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া অনেকের চাকরি চলে গিয়েছে। চাকরিহারা অনেক প্রার্থী সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। বেশকিছু মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। মাস কয়েক আগে নিয়োগ দুর্নীতির কিছু মামলায় তাঁর একক বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরবর্তীকালে ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। পরপর বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে এরকম ঘটনা ঘটায় এজলাসে বসেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে তিনি সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের তৎকালীন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।পরে অবশ্য বহু মামলায় তাঁর নির্দেশকেই বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।সেই সব নির্দেশের ভিত্তিতে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করছে ইডি এবং সিবিআই। সেই তদন্তের ফলে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে এযখনও জেলবন্দি।