গরু পাচার কাণ্ডে বুধবারও বোলপুরে তল্লাশি চালায় সিবিআই। তদন্তের স্বার্থে এদিন সিবিআইয়ের একটি টিম শান্তিনিকেতন ইনস্টিটিউট অফ পলিটেকনিক কলেজে যায়। প্রায় ঘন্টাখানেক শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজের কর্ণধার মলয় পিট কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআই এর তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, মলয় পিটের কাছে বেশকিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই।
জিজ্ঞাসাবাদে মলয় পিট জানান, অনুব্রত মণ্ডল কে দুটি গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল। যে গাড়িতে অনুব্রত মণ্ডল লালবাতি লাগিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে গেছিল। পরবর্তী সময়ে সিবিআই অনুব্রত মণ্ডলের রাইস মিল ভোলেবোমে ওই গাড়িগুলির সন্ধান পায়। এই গাড়িগুলির কাগজপত্র নিয়ে যায় সিবিআই। তদন্তে জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ তৈরির জন্য অনুব্রত মণ্ডলের সুপারিশে নয় কোটি টাকা অনেকেই দিয়েছিল। এই টাকা কারা দিয়েছিল? কেনই বা তাঁরা এত বিপুল পরিমাণ টাকা মলয় পিটকে দিতে গেল? এই যাবতীয় বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে। এছাড়া ওই মেডিকেল কলেজের কর্ণধার জানান, তাঁর রাজ্য এবং রাজ্যের বাইরে একাধিক পলিটেকনিক, আইটিআই বিএড, ডিএড কলেজ রয়েছে। এই সামগ্রিক বিষয়েও জানতে চেয়েছিলেন সিবিআই এর গোয়েন্দারা।
অনুভূত মন্ডল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা বীরভূমে একাধিক রাইস মিলের মালিক রাজীব ভট্টাচার্যকে ঘন্টা দুয়েক জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিন সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস রতনকুটিতে রাজীব ভট্টাচার্য এবং আরও এক অনুব্রত ঘনিষ্ঠ সুজিত দে নামে এক ব্যবসায়ীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।
রাজীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এর আগেও নিজাম প্যালেসে গরু পাচার কাণ্ডে তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। আজও সিবিআই এর মুখোমুখি হলেন তিনি। আগামী দিনেও সবরকম সহযোগিতা করবেন। তবে তিনি একইসঙ্গে দাবি করেন, অনুব্রত মণ্ডল কে তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ৬৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা এখনও ফেরত পাননি। এই সব বিষয় নিয়েই সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
অনুব্রত ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী সুজিত দে জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতির জ্যোতিষী হিসেবে তাঁর কোষ্ঠি তৈরি করতেন। যদিও সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদ সুজিত দের অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়েছে একাধিকবার। গরু পাচার কাণ্ডের টাকা ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও হাত বদল হয়েছে বলে মনে করছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসাররা। তাই তাঁর কাছ থেকে একাধিক নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছিল। সুজিত দে এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি আর জমা দিয়ে আসে সিবিআইয়ের কাছে। গত ৩১ আগস্ট অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ সুজিত দে-র বাড়িতে সিবিআই ঘন্টার পর ঘন্টা তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল।