Thursday, June 12, 2025
Homeদেশশতরঞ্জ কি খিলাড়ি প্রধান 'মন্ত্রী'র কিস্তির চাল

শতরঞ্জ কি খিলাড়ি প্রধান ‘মন্ত্রী’র কিস্তির চাল

Follow Us :

বিরোধী জোটের বোড়ের চালের আগে একটি কিস্তি দিয়ে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাঁচ রাজ্যের ভোট ও লোকসভা নির্বাচনের আগে মাস চালাতে চোখের জলে, নাকের জলে হওয়া গৃহিণীদের হাতে পুজোর আগে টিস্যু পেপার তুলে দিলেন। মুম্বইয়ে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক শুরুর মাত্র দুদিন আগে গ্যাসের দাম কমিয়ে বিজেপি বুঝিয়ে দিল, রেকর্ড আসনে জেতার বেলুনের গ্যাস কমে আসছে। দর্জির কাছে গেলে জানা যাবে ছাতির মাপ এখনও ৫৬ ইঞ্চি আছে কি না! তাই আরব সাগরের তীরে যে ঢেউ উঠতে চলেছে, তার আগেই ‘ইন্ডিয়া’র দুর্গে সিঁদকাঠি চালালেন মোদি।

রান্নার গ্যাস ও পেট্রল-ডিজেলের দামবৃদ্ধি কেমন যেন গা-সওয়া হয়ে গিয়েছিল। শুধু গা জ্বলে যায় বাজারে ঢুকলে। সবজি, মাছ, সব কিছুরই নিত্য তাপমাত্রা বাড়ছে। শুধু নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্তরাই নন, বিপদে পড়েছেন সবজি বিক্রেতারাও। পাইকারি বাজারের পারদ চড়ার দরুন তাঁরাও সেইভাবে খরিদ করতে পারছেন না। ফলে, বড় বিক্রেতারা আরও চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন। তাই রাখি পূর্ণিমার আগের দিন ‘সর্বধর্ম সমন্বয়কারী’ মুখমিষ্টি করানো হল দেশের ‘প্যায়ারি বহেনা’দের।

রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে বাজারে কী কী প্রভাব পড়ে, তা এখন সকলেই জানেন। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে, এই ভর্তুকি দিয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির আগুন ঠান্ডা করা যাবে তো! কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপি অসুরের মতো এখন থেকেই দাপাদাপি করে চলেছে ভোট বৈতরণী পার হতে। বিশেষত, পাঁচ রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে গেরুয়া বাহিনী। তাই আপাতত দেশ গোল্লায় যাক, জিতটাই তাদের কাছে মুখ্য। তাই রঘু ডাকাতের মতো জনগণকে লুট করে চলেছে বিজেপি সরকার। গোটা দেশ যখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির আগুনে জ্বলছে, তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী জি ২০ সম্মেলনের ঋত্বিক সেজে বসতে চলেছেন।

এই ‘ভরসাফূর্তি’ উৎসবে ‘শোলে’ সিনেমার মতো ডায়ালগ শোনা যাবে। চীনের বিরুদ্ধে ভারত প্রকাশ্যে বলবে ‘লোহে লোহে কো কাটতা হ্যায়’। আর জিনপিংকে আড়ালে বলবে, ‘ইয়ে দোস্তি, হাম নেহি তোড়েঙ্গে’। কিন্তু, দেশবাসী জানে, ‘ইয়ে হাত…ফাঁসি কা ফান্দা হ্যায়।’ আশ্বাসের বরাভয় নয়। তাই জি ২০ হোক বা পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সবখানেই ‘সবকা বিকাশ’এর প্রতিধ্বনি শোনা যাবে। অন্যদিকে, জনগণের পকেট ফাঁক হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ, কাঁঠালের আমসত্ত্ব তৈরির শপথ গ্রহণ।

একথা ঠিক যে, বিশ্বের বাজারে ভারতের রাজনৈতিক ব্যাপারির গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু, দেশের মানুষের বুকের উপর পা রেখে নতুন আলো জ্বালানোর নামে ঘরে আগুন লাগানোর কারণ কী? আসলে সরকার স্বীকার করছে না, রাজস্ব ভাণ্ডারের এখন ভাঁড়ে মা ভবানী দশা। তাই দেশের মানুষকে চান্দামামার স্বপ্নে বুঁদ করে রাখার কাজ চলছে সচেতনভাবে। 

মোদিজি জানেন, আঞ্চলিক দলের বিভক্ত রাজনীতির রমরমা যতদিন জোরালো থাকবে, ততদিন বিজেপির সদর দরজায় সিদ্ধিদাতা বিরাজমান থাকবেন। মনে রাখতে হবে, ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি বিজেপির ছদ্মবেশ মাত্র। বিরোধীরা ওটা ছেঁড়াছেঁড়িতে যত ব্যস্ত থাকবে, ততই মোদি-শাহের মঙ্গল। আসলটা হচ্ছে, সকলের অজ্ঞাতসারে অর্থনৈতিক বিভাজন তৈরি করা। এই বিভাজন যত দৃঢ় হবে, ততই শাসকের রাজদণ্ড মজবুত হবে এবং কার্যত বিরোধীদের হারমোনিয়াম-তবলা বিকল হবে।

চন্দ্রযানের সাফল্যকে ছেলে ভোলানো মোয়া বানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এখন চাষি-শ্রমিকের ছেলেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানী করার মহাকাশীয় স্বপ্নে বিভোর করে রাখছেন। মোদিজি, দেশবাসী বোকা হতে পারে, কিন্তু বৃহত্তর অর্থে আমরা বোকাছেলে নই। আপনার টিয়াপাখির খেল কাজে আসবে না। বরং, আপনার সেই ঝোলা গুছিয়ে রাখাই ভালো। হিমালয়ের গুহা অপেক্ষা করে আছে, এবার আর ক্যামেরা থাকবে না।

ধর্ম-রাজনীতির পাশাখেলায় পণ ধরতে গিয়ে মোদি সরকারের এখন ভরা রাজসভায় দ্রৌপদীর দশা। দেশের ভিতরে এবং বাইরে ক্রমাগত বস্ত্রহরণ হয়েই চলেছে। সে কারণেই বিরোধীদের মুখ সেলাই করতে চীন, পাকিস্তান ও কাশ্মীরি জঙ্গির ‘সুতো’ ব্যবহার করছে কেন্দ্র। কিন্তু, ভারতের থেকে দশগুণ শক্তিশালী লাল ফৌজের অরুণাচলে উপদ্রব নিয়ে নিজে কুলুপ এঁটেছে সরকার। তারা অবাধে ‘লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল’ (ল্যাক) পেরিয়ে ঢুকছে। ভারতীয় সেনার মালবাহকদের চড়চাপাটি মেরে চলে যাচ্ছে। সাঁকো ভাঙছে। সেইখানে পাক বিরোধী ভারতের বজ্রগর্ভ নিনাদ মিউমিউ করছে।

অরুণাচলে নিয়ন্ত্রণ রেখার ও-পারে চীনা সেনার গতিবিধি বাড়ছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছেই চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মির মহড়া, সমরসজ্জা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। লাদাখের সংঘর্ষের পরেই ভারতীয় সেনার নবগঠিত অ্যাভিয়েশন ব্রিগেডের অধীনে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ইজরায়েলি হেরন ড্রোন উড়ছে দিনে-রাতে। সেই ড্রোন থেকে পাওয়া ছবি, হেলিকপ্টারে লাগানো সেন্সর, গ্রাউন্ড রেডার ও কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি থেকেই জানা গিয়েছে চীনাদের শক্তিবৃদ্ধির নির্দিষ্ট তথ্য। আরও কয়েক লাফ এগিয়ে চীন ফের অরুণাচলের একাংশকে যুক্ত করে মানচিত্রও প্রকাশ করেছে।

ফলে, জি ২০ বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সামনে ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ সিনেমার উৎপল দত্তের মতো নেচেনেচে ‘রায়বাহাদুর’ হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এক ‘ফকির’। বিশ্ব রাজনীতিতে রায়বাহাদুর খেতাব এবং দেশীয় রাজনীতিতে টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খোয়াবকে উজ্জ্বলা রাখতেই ‘চির ভিখারি হৃদি’ গেরস্তের হেঁসেলে একবার টোকা দিয়ে রাখলেন বিজেপি অ্যান্ড কোং-এর মালিক।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Air India | Vijay Rupani | বিমানে বিজয় রূপানির শেষ মুহূর্তের ছবি, দেখুন ভাইরাল ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Air India | Ahmedabad | ওড়ার সাথে সাথেই 'মে ডে কল', বাঁচানারো মরিয়া চেষ্টা পাইলটের
00:00
Video thumbnail
Russia-Ukraine | রাশিয়া- ইউক্রেন যু/দ্ধে বাজিমাত ভারতের অত্যাধুনিক মিসাইলের, দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
Air India | Ahmedabad | বিমান ওড়ার পরই 'মে ডে কল', কী এই 'মে ডে কল'? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
02:01:39
Video thumbnail
Air India | Ahmedabad | মৃ/ত্যুর আশঙ্কা ২৪২ যাত্রীর, দেখুন এই মুহূর্তের কী অবস্থা
04:24:26
Video thumbnail
Air India | Amit Shah | বিমান দুর্ঘটনা কাণ্ডে অমিত শাহ-কে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
03:05:17
Video thumbnail
Indian Exportation | এবার ভারত থেকে বিদ্যুৎ যাবে আরব দুনিয়ায়, কীভাবে যাবে? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
02:09:58
Video thumbnail
Iran | Israel | ইরানের বি/স্ফো/রণের পিছনে ইজরায়েলি হা/না? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
02:14:48
Video thumbnail
Justice Suryakant | ভারতীয় বিচারব্যবস্থা গভীর বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে, কেন? মন্তব্য বিচারপতির
03:07:15
Video thumbnail
Indian Exportation | বিদ্যুৎ রফতানি, বিরাট পদক্ষেপ ভারতের, কী সিদ্ধান্ত? দেখুন বড় খবর
04:06