রায়পুর: নির্বাচন নয়। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (CWC) সদস্যদের মনোনীত করবেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge)। শুক্রবার ছত্তিশগড়ের রায়পুরে শুরু হওয়া কংগ্রেসের ৮৫-তম অধিবেশনের (Congress’s 85th plenary session) শুরুতেই স্টিয়ারিং কমিটি (Steering Committee) এই সিদ্ধান্ত নিল। এর সঙ্গেই প্রমাণ হল, দেশের সর্বপ্রাচীন রাজনৈতিক দলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার থেকে গোষ্ঠীবাজিই প্রাধান্য পেয়ে থাকে। যদিও এই বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi), রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর (Priyanka Gandhi Vadra) কেউই হাজির ছিলেন না।
একদা নেহরু থেকে গান্ধী পরিবারের ‘প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি’তে তাঁদের বিরোধী কারও ঠাঁই ছিল না। এবারেও গান্ধী পরিবারের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও অনুগত খাড়্গের হাতে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য বাছাইয়ের দায়িত্ব দিয়ে রাশ ১০ জনপথের হাতেই রাখা হল বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য স্টিয়ারিং কমিটিতে এই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিতে হয়নি বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। অজয় মাকেন, অভিষেক মনু সিংভি এবং প্রবীণ দিগ্বিজয় সিংয়ের মতো নেতারা নির্বাচনের পক্ষে ছিলেন। এমনকী এখন সম্ভব না-হলেও ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের পরও ভোটাভুটির প্রস্তাব দেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: RBI – UPI: সিঙ্গাপুরের পর আমির শাহি, মরিশাস ও ইন্দোনেশিয়াতেও ইউপিআই পরিষেবা শুরুর উদ্যোগ
কিন্তু বৈঠক শেষে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের মনোনীত করবেন বলে স্টিয়ারিং কমিটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।। সব মিলিয়ে স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে হাজির না থাকলেও কংগ্রেসের নীতি নির্ধারক কমিটির চালকের ভূমিকাতেই থাকল গান্ধী পরিবার।
এদিন কংগ্রেস অধিবেশনের শুরুতেই জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। অধিবেশনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেই সোনিয়া, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কার গরহাজিরা নিয়ে চর্চা শুরু হয়। কংগ্রেসের শীর্ষ নীতি নির্ধারক ‘মস্তিষ্ক’ ওয়ার্কিং কমিটির নির্বাচন সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের আলোচনাতেই অনুপস্থিত গান্ধী পরিবার। তখন থেকেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছিল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, মা-পুত্র-কন্যা চাইছেন দলের নতুন সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। সোনিয়া-রাহুল শুক্রবার দুপুরের পর অধিবেশনে হাজির হন।
অনেক নেতা মনে করছেন, ওয়ার্কিং কমিটির নির্বাচন সংক্রান্ত বৈঠকে গান্ধী পরিবার উপস্থিত থাকলে সমালোচনার অবকাশ থাকত। সে কারণেই কোনও রকম সন্দেহ যাতে না থাকে, কেউ যাতে মনে করতে না পারে, ওয়ার্কিং কমিটি গঠনে তাঁদের প্রভাব রয়েছে, সে কারণেই ওই বৈঠকে ইচ্ছাকৃতভাবে উপস্থিত ছিলেন না তিনজনেই।
কংগ্রেস সরকারিভাবে গান্ধী পরিবার-মুক্ত হলেও সকলেই জানেন দলের উপর তাঁদের নিয়ন্ত্রণ কতটা। ফলে স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে তাঁদের উপস্থিত থাকা, না-থাকাটা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল না কারও কাছে।