নয়াদিল্লি: দিল্লির পর এবার কংগ্রেস শাসিত ছত্তিশগড় (Chhattisgarh)। বিধানসভা নির্বাচনের বছরে ২০০০ কোটি টাকার আবগারি কেলেঙ্কারির (Liquor Scam) হদিশ পেল ইডি (ED)। সূত্রের দাবি, শনিবার কংগ্রেস নেতা এবং রায়পুরের মেয়র এইজাজ ধেবরের (Raipur Mayor Aijaz Dhebar) ভাই আনোয়ার ধেবরকে (Anwar Dhebar) গ্রেফতার করে ২ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির খোঁজ মিলেছে। রবিবার ইডি সূত্র জানিয়েছে, নজিরবিহীন দুর্নীতির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। শীর্ষস্তরীয় নেতা এবং আমলারা এই কেলেঙ্কারি পিছনে রয়েছেন। ধেবরকে গ্রেফতার করে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে এই গুপ্তচক্রের বেশ কিছু তথ্য এসেছে।
রায়পুরের এক হোটেল থেকে শনিবার গ্রেফতার করা হয় ধেবরকে। তিনি হোটেলের পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। রবিবার এক বিবৃতিতে এজেন্সি জানিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নজিরবিহীন দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গিয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। ছত্তিশগড়ে আনোয়ার ধেবরের নেতৃত্বে এক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই সংগঠিত অপরাধ চলত বলে দাবি। যদিও এর পিছনে উচ্চপদস্থ আমলা এবং রাজনৈতিক নেতারাও জড়িত বলে কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি।
আরও পড়ুন: KCF Chief Killed | খলিস্তানি জঙ্গি নেতা পাঞ্জোয়ার খুন লাহোরে, দেহ ভারতে আনার দাবি পরিবারের
ছত্তিশগড়ে বিক্রিত প্রতি বোতল মদ থেকে পয়সা তুলত আনোয়ার। এমনভাবেই সে উপরওয়ালা থেকে নিচুতলা পর্যন্ত তার জাল বিছিয়ে রেখেছিল। এর আগে মার্চ মাসে এই কাণ্ডে তল্লাশি অভিযান চলেছিল। গত মে মাসে আয়কর দফতরের একটি চার্জশিটের ভিত্তিতে অর্থ তছরুপ আইনে (PMLA) তদন্ত শুরু করে ইডি। সংস্থার দাবি, আনোয়ার হল মদ সিন্ডিকেটের ফ্রন্টম্যান ও তোলা সংগ্রহের মূল পান্ডা। এই কাজে সে ছত্তিশগড়ের আবগারি দফতরের শীর্ষ প্রশাসনকে পকেটে পুরে ফেলেছিল।
প্রসঙ্গত, মদ কেনা ও বিক্রির পুরোটাই রয়েছে ছত্তিশগড় সরকারের হাতে। সে রাজ্যে কোনও বেসরকারি মদের দোকান নেই। রাজ্যের ৮০০টি মদের দোকানেরই মালিক সরকার। এর জন্য রয়েছে ছত্তিশগড় স্টেট মার্কেটিং কর্পোরেশন লিমিটেড (CSMCL) নামে একটি সংস্থা। ইডি তদন্তে জানতে পারে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আনোয়ার সিএসএমসিএলের কমিশনার এবং এমডি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ কর্মীদের করায়ত্ত করেছিল। যার ফলে পুরো ব্যবস্থাই সে একা কন্ট্রোল করত।
বেসরকারি মদ প্রস্তুতকারক কোম্পানি থেকে আবগারি দফতরের সব স্তরে তার লোকেরা কাজ করত। এইসব কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুষ ও কমিশন আদায় করত সে। তবে ইডি-র বিবৃতিতে এও বলা হয়েছে, আনোয়ার নিজের হাতে এসব কাজ করলেও এই টাকার ভাগ তার রাজনৈতিক প্রভুদেরও দিতে হয়েছে। ফলে রাজ্য রাজনীতির শীর্ষস্তরীয় একাংশ এই দুর্নীতিতে গেঁথে রয়েছে বলে তাদের দাবি।