কলকাতা: বিজেপির মিছিলে সিপিএমের ঝান্ডা নিয়ে ফের বিতর্ক। হুগলির পোলবা-দাদপুর ব্লকের হারিট পঞ্চায়েতে আবাস যোজনার দুর্নীতির প্রতিবাদে শুক্রবার মিছিল করে বিজেপি। সেই মিছিলে সিপিএমের লাল ঝান্ডা হাতেও কয়েকজনকে দেখা গিয়েছে। তা নিয়েই রাজনৈতিক মহল্ রাম-বাম সমঝোতা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোযের ব্যাখ্যা, রাস্তার ধারে আমাদের ঝান্ডা লাগানো ছিল। তা খুলে বিজেপির লোকদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা করার জন্য। বিজেপির সঙ্গে মিছিলের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
এর আগে দুই মেদিনীপুরের কিছু এলাকায় সমবায় সমিতির ভোটে তৃণমূলকে হারানোর জন্য বাম-বিজেপি জোট গড়ে লড়াই করে হেরে যায়। তখনও রাম-বাম সমঝোতার প্রশ্নটি সামনে এসেছিল। ওই ঘটনা নিয়ে সিপিএম ঘোর অস্বস্তিতে পড়ে। দলের রাজ্য কমিটি পর্যন্ত জল গড়ায়। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে ওই ঘটনা খতিয়ে দেখতে জেলা স্তরে কমিশন গঠন করা হয়। কমিশনের তদন্তে ধরা পড়ে, ঘটনাটি ঠিক। কমিশন পূর্ব মেদিনীপুরের জনা চারেক পার্টি নেতাকে বহিষ্কার করে। রাজ্য কমিটি পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, বিজেপি, তৃণমূলের সঙ্গে কোনও রকম সমঝোতা কোনও স্তরে চলবে না।
আরও পড়ুন:Rahul Gandhi: শেষ দফায় সঙ্গী মা আর বোন, শনিবার দিল্লি পৌঁছাল সোনিয়া-তনয়ের ভারত জোড় যাত্রা
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। সেই ভোটে একেবারে স্থানীয় ইস্যু কাজ করে। সেখানে কে কোথায় কার সঙ্গে জোট করে, তা অনেক সময় কলকাতায় বসে বিভিন্ন দলের নেতারা জানতেও পারে না। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তৃণমূলকে হারাতে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে এই ছবি অনেক জায়গাতেই দেখা যেতে পারে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পঞ্চায়েত ভোটে এটাই হবে বাস্তব ছবি। মেদিনীপুরেও তৃণমূলের দাদাগিরি এবং চুরি রুখতে রাম-বাম যৌথ মঞ্চ গড়ে সমবায় ভোটে লড়াই হয়।
সমবায়ের পর আবাস যোজনার দুর্নীতির প্রতিবাদে রাম-বাম একত্রে মিছিল করায় বিড়ম্বনায় পড়েছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, আমরা চোর ধরার ডাক দিয়েছি। সেই ডাকে যদি তৃণমূল, বিজেপি সাড়া দেয়, আমরা কী করব। গ্রামে যখন ডাকাত পড়ে, তখন কে বিজেপি, কে তৃণমূল, দেখা হয় না। ডাকাত ধরতে সবাই এগিয়ে আসে। তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, সিপিএমের মুখোশ খুলে যাচ্ছে। ওদের হুগলি জেলা সম্পাদকের উদ্ভট ব্যাখ্যা মানুষ নিচ্ছে না।
আরও পড়ুন:Provident Fund: কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী সরকারি কর্মীরা ৫ লক্ষের বেশি পিএফে বিনিয়োগ করতে পারবেন না
কয়েকদিন আগেই মালদহে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম পঞ্চায়েত ভোটে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির সঙ্গে জোটের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বিজেপি এবং তৃণমূল বাদে সব দলকে একত্রিত করার চেষ্টা করছি আমরা। কংগ্রেসের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনাও করব। রাজ্য কংগ্রেসেরও একটা বড় অংশ বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষপাতী। তার মধ্যেই হুগলিতে রাম-বাম মিছিল নিয়ে ঘোর অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিএম। এখন সেই অস্বস্তি কাটাতে কী ভূমিকা নেয় সিপিএম, সেটাই দেখার।