কোলাপুর (মহারাষ্ট্র): ঔরঙ্গজেব ও টিপু সুলতানের গুণকীর্তন করে একটি হোয়াটস অ্যাপ পোস্ট ভাইরাল হওয়াকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মহারাষ্ট্রের কোলাপুর শহর। হিন্দুত্ববাদীদের প্রতিবাদকে ঘিরে ঢিল-পাটকেল ছোঁড়া, দোকান-গাড়ি ভাঙচুর শুরু হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হোয়াটস অ্যাপ পোস্টের জন্য দুই নাবালককে আটক করেছে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ রাজ্যবাসীকে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছেন।
আপত্তিজনক পোস্টের জন্য হিন্দুত্ববাদীরা বুধবার ছত্রপতি শিবাজি চকে জমায়েত হতে থাকে। কয়েক হাজার হিন্দু সেখানে জড়ো হয়। এরপরই সেই জমায়েত থেকে পাথর ছোড়া শুরু হয় বলে অভিযোগ। একইসঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশ ও কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর হয়। তখন পুলিশ জমায়েতের উপর লাঠিচার্জ করতে থাকে। তাতে জনতা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন।
তিনি বলেন, ঔরঙ্গজেবের গুণগান করবে যারা, মহারাষ্ট্রে তাদের কোনও ক্ষমা নেই। কোলাপুরে বিরোধী দলের লোকজন দাঙ্গা ছড়াচ্ছে বলে রটাচ্ছে। কয়েকজন ঔরঙ্গজেব এবং টিপু সুলতানের আপত্তিকর ছবি ছড়িয়েছে হোয়াটস অ্যাপে। সেখানে ঔরঙ্গজেবকে মহিমান্বিত করা হয়েছে। কারা এসব কথা বলছে? আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি। এটাও ঠিক যে, হঠাৎ করে ঔরঙ্গজেব এবং টিপু সুলতানের বন্দনা করার কারণ কী? এমনটা করা উচিত হয়নি। একটি গোষ্ঠীর লোকজন, বিরোধীরা এতে খুশি হচ্ছে। ঔরঙ্গজেবের গৌরববৃদ্ধির চেষ্টা আমরা সহ্য করব না। এই ধরনের লোকেরা ঔরঙ্গজেবকে দেশপ্রেমী বলে প্রচার করার চেষ্টা করছে, বলেন ফড়নবিশ।
হিন্দুত্ব সংগঠন বুধবার কোলাপুর বনধের ডাক দিয়েছিল। সকালের পরে তারা শিবাজি মহারাজ চকে জমায়েত করে। কয়েক হাজার মানুষ সেই জমায়েতে যোগ দেন। পুলিশ-প্রশাসন আগে থেকেই জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে হিন্দুদের জমায়েত দেখে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে আগুনে ঘৃতাহুতি হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রতিবাদীরা পাথর ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। শহরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বনধের কারণে এদিন সকাল থেকেই গোটা শহর ছিল স্তব্ধ। দোকানপাট, অফিস-কাছারি সব বন্ধ ছিল। প্রতিবাদকারীদের দাবি, অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। জাতীয় নেতাদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জমায়েত থেকে পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান ওঠে।