কলকাতা: ইডির (ED) জমা পড়া চার্জশিটে (Chargesheet) দাবি করা হয়েছে, বিদ্যুৎবরণ গায়েন ওরফে মুন এবং লক্ষ্মণ মেটে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতেই থাকত। বিদ্যুৎবরণ (Bidyutbaran Gayen) তাঁর খুবই ঘনিষ্ঠ। তাঁর ছেলের মতো। তাই বিদ্যুতের আয়কর রিটার্নের ফাইলও তাঁর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারি (Manish Kothari) দেখত। তা হলে সেই বিদ্যুৎ ৭.৭১ কোটি টাকা দিয়ে যে জমি কিনেছিল সেই টাকা কোথা থেকে পেল? ওই জমির বাজার দর ছিল তো সাড়ে ১২ কোটি টাকা। অনুব্রত (Anubrata Mondal) বলেছেন, সেটা আমি বলতে পারব না। তাঁর আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অনুব্রত বলেছেন, গত দশ বছরে তাঁর আয় হয়েছে চাল কল থেকে আর জমি কেনা-বেচা থেকে। তাঁর দুটি রাইস মিল তথা চাল কল রয়েছে। একটির নাম ভোলে ব্যোম রাইস মিল। সেটি রয়েছে বোলপুরের কালিকাপুরে। অন্যটি শিবশম্ভু রাইস মিল। যেটা রয়েছে ভুবনডাঙায়। ওই রাইস মিলটি তিনি লিজে দিয়েছেন। মোট ২০ বিঘা জমি রয়েছে সেখানে। ভোলে ব্যোম রাইস মিলটি তিনি মণ্ডল পরিবারের থেকে কিনেছিলেন। কেনার সময়ে শ্যামল মণ্ডল পরিবারের প্রতিনিধি হিসাবে তাঁর কাছে এসেছিলেন। স্ত্রী ছবি মণ্ডল ও মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে রাইস মিলটি কিনেছিলেন তিনি। আগে সেটির নাম ছিল শ্রীগুরু রাইস মিল। পরে নাম বদলে হয় ভোলে ব্যোম রাইস মিল। তাঁর স্ত্রী ছবি মণ্ডল কোনও ব্যাপারে জড়িত ছিলেন না। মণীশ কোঠারির তত্ত্বাবধানে তিনি ও তাঁর মেয়েই ব্যবসার কাজ দেখতেন।
অনুব্রত মণ্ডল ২০১২ সাল থেকে সায়গল হোসেনকে চিনতেন। সায়গল তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করত। সায়গল তাঁর বাড়িতে থাকত না। সায়গল হোসেনের ফোন নম্বরও তাঁর জানা নেই। তাঁর রাজনীতির সঙ্গে সায়গল হোসেনের কোনও সম্পর্ক নেই। কখনও কখনও দলের নেতারা তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য সায়গলের ফোনে ফোন করতেন। তাঁর দুটো ফোন সায়গল হোসেনের কাছেই থাকত। তা ব্যস্ত থাকলে সায়গলের ফোনেও কথা হত। ছোটবেলা থেকেই অনুব্রত রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ইলমবাজার, সাইঁথিয়া, মুরারই-২ এবং লোহাপুর হল গরুর প্রধান হাট। বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও মুন নামে পরিচিত ছিল। সে তাঁর বাড়ির পরিচারকের কাজ করত।
আরও পড়ুন: Cattle Smugling Chargesheet| সীমান্তে কীভাবে গরু পাচার হয়েছে চার্জশিটে তা উল্লেখ করল ইডি
লটারির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে অনুব্রত বলেছেন, বাপি গঙ্গোপাধ্যায় হলেন লটারির দোকানের মালিক। তিনি ও তাঁর মেয়ে মিলে ১০-১২টা লটারি জিতেছিলেন। সুব্রত বিশ্বাস হলেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। তাঁর ছোটবেলার বন্ধু। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারিই তাঁর সব ব্যবসা ও আয়কর রিটার্নের ব্যাপার দেখত। সে যেরকম পরামর্শ দিত তেমনই সব কিছু করা হত। এ ব্যাপারে মণীশকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া ছিল। শান্তিনিকেতনের কাছে তাঁর ৯০ কাঠা চাষ যোগ্য জমি রয়েছে। যার দাম আড়াই কোটি টাকা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অনুব্রত বলেছেন, মণীশ সব বলতে পারবে। মণীশকে মাসে ৫০ হাজার টাকা করে দিতেন অনুব্রত।