চন্দ্রকোনা: বেহাল ফিল্মসিটির পুনরুজ্জীবনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন কর্মীদের। এরকমই দশা চন্দ্রকোনা রোডের ফিল্মসিটির। ২০১২ সালে ঢাক ঢোল পিটিয়ে শাহরুখ খানের (Sharukh Khan) হাত ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রোডে (Chandrakona Road of West Midnapore) পথ চলা শুরু হয়েছিল প্রয়াগ ফিল্মসিটির (Prayag Film City)। প্রায় ২৭০০ একর জায়গার সঙ্গে ১২০০ কোটি টাকার প্রকল্প।
এখানে শুধু বাংলা সিনেমা (Bengali Movies) নয়, হিন্দি ও ইংরেজির সঙ্গে টলিউডের সিনেমা করার পাশাপাশি যাতে দেশ-বিদেশ, শহর, রাজ্য এবং জেলার পর্যটকরা রাত্রিবাস করে এখানকার সাইটসিনগুলো দেখতে পারেন, তার ব্যবস্থা করেছিল তৎকালীন কর্তৃপক্ষ। তাই ফিল্মি দুনিয়ার বিভিন্ন চিত্র ছাড়াও রয়েছে নকল বিমান, জলজ্যান্ত ড্রাগন, বিভিন্ন ধরনের রাজপ্রাসাদ, শুটিং করার ট্রেন, সেতু, কুমির সহ বিভিন্ন ধরনের ফাইভ ডি মিউজিয়াম। ভেন্ডার, সাফাই কর্মীসহ পাঁচ হাজার কর্মী ছিল এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।
আরও পড়ুন: Cancer Detection: আর বায়োপসি নয়, ক্যানসার বোঝা যাবে রক্ত পরীক্ষা করেই!
এক সময় এখানে টলিউডের বিখ্যাত সিনেমা যোদ্ধা, বেগমজান, ছায়ামানুষ, রাজকাহিনী, জুলফিকার, কমান্ডো, বোঝে না সে বোঝে না, কবীর সিনেমার মতো সিনেমার শুটিং হয়েছে। অভিনয় করতে এসেছেন দেব, সোহম, মিমি সহ টলিউডের একঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রী। হয়েছে বিভিন্ন জনপ্রিয় সিরিয়ালের শুটিং। এছাড়াও বহু পর্যটক এসেছেন এখানে ফিল্মসিটি দেখার জন্য। ঠিক যেভাবে রামোজি ফিল্মসিটি (Ramoji Film City) দেখার জন্য ভিড় জমান পর্যটকরা।
কিন্তু, সরকার পরিবর্তন পরেই ২০১৪ সালের পর থেকেই অধঃপতন শুরু হয়। এই ফিল্মসিটির মালিকের জেলে যাওয়ার পর থেকেই ধস নামে এই সংস্থার। বর্তমানে ৫০ জন কর্মী নিয়ে কোনওক্রমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এই ফিল্মসিটি। শুটিং প্রায় হয় না বললেই চলে। শীতকালে কিছু কিছু পর্যটক আসেন দেখার জন্য। কিন্তু যাওয়ার সময় একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরে যান ফিল্মসিটির করুণ দশা দেখে।
এরই সঙ্গে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো যোগ হয়েছিল করোনা। গ্রীষ্মকালে এখানে আর কাকপক্ষীও আসে না। ফলে এই বেহাল দশা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে প্রয়াগ ফিল্মসিটি। তাই এখানকার বর্তমান কর্মীরা যাঁদের বর্তমানে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা, তাঁরা আবেদন করছেন সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থার কাছে দায়িত্বভার নেওয়ার। যাতে এই সংস্থা আগের মতো জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে ওঠে।
প্রয়াগের মার্কেটিং ম্যানেজার আশিস পাল বলেন, যখন শাহরুখ খানের মতো ব্যক্তিত্ব এই ফিল্মসিটির উদ্বোধন করেন, তখন আমরা স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম কাজ করতে। সেখানে আজ ভগ্নদশা। ১২০০ কোটি টাকার প্রকল্পের কী দশা হয়েছে। আমরা এখন ভবিষ্যতের চিন্তায় রয়েছি। তাই সরকার সহ সকলের কাছে আবেদন, দয়া করে আমাদের বাঁচান। আমরা চাই আগামিদিনে যে কেউ এর দায়িত্ব নিয়ে আবার নবজীবন দান করুক এই ফিল্মসিটির।