পাটনা: দিনের আলো ফোটার আগেই জেল (Jail) থেকে মুক্তি পেলেন বিহারের কুখ্যাত গ্যাংস্টার (Gangster) থেকে রাজনীতিক হওয়া বন্দি আনন্দ মোহন সিং (Anand Mohan Singh)। যদিও বিধায়ক-পুত্র চেতন আনন্দের (MLA Chetan Anand) আংটি বদল অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৬৯ বছর বয়সি প্রাক্তন লোকসভা সদস্য় (Former MP) আনন্দ প্যারোলে (Parole) মুক্তই আছেন। তা সত্ত্বেও সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও হুড়োহুড়ি এবং লোকচক্ষুর নজর এড়াতে ভোররাতে তাঁকে সরকারিভাবে মুক্তি দেওয়া হয়। বহু ওজরআপত্তি সত্ত্বেও আনন্দ মোহনকে মুক্তি দিতে আইন বদল করেছে বিহারের জেডিইউ-আরজেডি সরকার (Bihar Government)। তারপর বৃহস্পতিবার সূর্য ওঠার আগেই সহর্ষ জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ফের সক্রিয় রাজনীতিতে পা দিতে চলেছেন আনন্দ মোহন।
১৯৯৪ সালে গোপালগঞ্জের জেলাশাসক জি কৃষ্ণাইয়াকে (Gopalganj DM G Krishnaiah) একদল দুষ্কৃতী গুলি করে খুন করে। তিনিও ওই খুনে জড়িত ছিলেন বলে ২০০৭ সালে দোষী সাব্যস্ত হন। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। পাটনা হাইকোর্টেও (Patna High Court) তাঁর সাজা বহাল থাকে। এবছরের ১০ এপ্রিল বিহার সরকার কারা আইনে সংশোধন এনে তাঁর সাজা মকুবের পথ প্রশস্ত করে। যুক্তি হিসেবে বলা হয় ১৪ বছর সাজা কাটানো বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এর আগে এই আইনে ২০ বছর পর্যন্ত জেলের মেয়াদ ছিল।
আরও পড়ুন: Digital Sansad | খাতা-কলম উধাও হবে সংসদে, জেনে নিন কেন
সহর্ষের পাচগাছিয়ায় পৈতৃকবাড়িতে এখন আনন্দ মোহন রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি বলেন, কৃষ্ণাইয়া এবং তাঁর পরিবার এই দুঃখজনক ঘটনার শিকার হয়েছিলেন জনরোষের ফলে। একইসঙ্গে তিনি ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ফের সক্রিয় রাজনীতিতে ব্যাট হাতে নামতে চলেছেন। তাঁর কথায়, ভবিষ্যতে কী করব, তার জন্য পুরনো বন্ধু এবং শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে বসে ঠিক করব। তিনি আরও বলেন, আমি ইতিমধ্যেই আমার পরিকল্পনা জানিয়েছি। অদৃষ্টের লিখনে সাড়ে ১৫ বছর জেল কাটিয়েছি। তা সত্ত্বেও আমি হিম্মত হারাইনি। জেলে বসেই আমি ৬টি বই লিখেছি।
সহর্ষ জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি অপরাধে মুক্তি পেলেও তাঁর বিরুদ্ধে অন্য মামলা ছিল কিনা তা অনুসন্ধান করে দেখে ভোররাত ৩টে নাগাদ তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি প্যারোলে মুক্ত থাকলেও সরকারিভাবে মুক্তি পাওয়ার জন্য জেলে চলে আসেন। কাগজপত্রে সই করেই বেরিয়ে যান তিনি। মোহনের মুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর অনুগামীরা জেলের সামনে এসে স্লোগান দিতে থাকেন। কিন্তু, তাঁরা যখন জানতে পারেন মোহন ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন, তখন তাঁরা গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। সহর্ষ শহরে আনন্দ মোহনকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ির লাইন পড়ে যায়। পুলিশও এসকর্ট করার জন্য প্রচুর গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।