তিরুবনন্তপুরম: কেরলের সিপিএম মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের কন্যা টি বীণা এবং তাঁর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার বিরুদ্ধে ‘বেআইনি’ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠল। একটি বেসরকারি খনি কোম্পানির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী-কন্যার ১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকার বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জলঘোলা হতে শুরু করেছে। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ট্যাক্সেসের অধীন অন্তর্বর্তী বোর্ড ফর সেটলমেন্টের রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। কোচির একটি খনি কোম্পানির সেটলমেন্ট আবেদনের ভিত্তিতে এই গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে। কোম্পানির এমডি শশীধরন কর্থার অভিযোগ, নিরাপদে, শান্তি ও সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা চালানোর জন্য তাঁকে রাজনীতিক, রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক পদাধিকারী, সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের টাকা দিতে হয়েছে।
আয়কর দফতরের তথ্য উদ্ধৃত করে রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিজয়ন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা প্রয়াত ওমেন চান্ডি, প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়ক রমেশ চেন্নিথালা, দুই মুসলিম লিগ নেতাকেও টাকা দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী-কন্যা বীণাকে ১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে একটি মালয়ালম দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয় সম্প্রতি। তারপরই বিষয়টি আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন: স্বপ্নদীপকে ‘খুন’ করা হয়েছে, আবাসিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের বাবার
সংবাদপত্রটির খবর অনুযায়ী রিপোর্টে জানা গিয়েছে, কোচির ওই কোম্পানিটির সঙ্গে আগে বিজয়ন-কন্যার তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু বীণার সংস্থা ওই কোম্পানিকে কোনও সাহায্য বা পরামর্শ দেয়নি বলে সংবাদে বলা হয়েছে। অথচ, প্রতি মাসে খনি কোম্পানি থেকে কনসালট্যান্সি বাবদ একটি অর্থ বীণার সংস্থায় গিয়েছে। এর কারণ হিসেবে রিপোর্টে বলা হয়েছে, একজন প্রভাবশালীর কন্যা বলেই তাঁর সংস্থায় এই পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়েছে।
এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরেই বিজেপি তেড়েফুঁড়ে আসরে নেমেছে। মেয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের বিবৃতি দাবি করেছে গেরুয়া শিবির। সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম জোট এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী জোটকে নিশানা করে বিজেপি বলেছে, শাসক এবং বিরোধী জোট ডাকাতদের থেকেও তোলা তুলতে দ্বিধা করে না। শুধু মুখ্যমন্ত্রীর মেয়েই নয়, বিরোধী নেতারাও টাকা তুলতে ব্যস্ত। বিরোধী দলনেতা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমরা বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনলেও মুখ্যমন্ত্রী জবাব দেননি। অন্যদিকে, সিপিএম এসব অভিযোগ এককথায় নস্যাৎ করেছে। সংবাদপত্রের খবরকে ভিত্তিহীন বলে সিপিএম বলেছে, মুখ্যমন্ত্রীর মেয়ের সংস্থার সঙ্গে ওই কোম্পানি বৈধ চুক্তি অনুসারেই লেনদেন হয়েছে।
