ভোপাল: ইংরেজরা (British) ভারত ছাড়ার দুই দশকও পার হয়নি। ব্রিটিশ বিরোধী আবেগ তখনও ভারতের যুবকদের মনে প্রজ্বলিত। সেসময় হল্যান্ডকে (Holland) হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিল ভারত (India)। হকির (Hockey) সেই সোনালি ফ্রেমে (Golden Frame) উজ্জ্বল ছিলেন খেলোয়াড় টেকচাঁদ। পরাধীন ভারতের মোহনবাগানের ইংরেজদের ফুটবলে হারানোর চেয়ে কম আবেগের ছিল না তা। হকির সেই খেলোয়াড়রা ভারতবাসীর কাছে নায়কের মর্যাদা পেয়েছিলেন। আজ, সেই দলের খেলোয়াড় টেকচাঁদ (Teckchand) যা্দবের বিবর্ণ জীবনে দৈনন্দিন খাবার জোগাড়ে হিমশিম খাওয়ার অবস্থা। ৮২ বছরে অশক্ত শরীরেও তিনি এখন কাজ খুঁজছেন। দুমুঠো খাবার যাতে কেনা যায়।
নিয়তির দুর্বিপাকে নিঃসন্তান টেকচাঁদ, এখন বেঁচে থাকার জন্য খাবার জোগাড়ে অপরের মুখাপেক্ষী। এক সময় তিনি দেশের উজ্বল নক্ষত্র (Star) ছিলেন। একশো দিনের (MGNREGA) কাজের জন্য জবকার্ড রয়েছে। কিন্তু,৮২ বছর বয়সে শরীর সঙ্গ দিচ্ছে না। তাছাড়া, ৮২ বছরের বৃদ্ধকে কে দেবে কাজ? আক্ষেপ ঝরে পড়ছে তাঁর কথায়। সেই কথার ভাঁজেই হকি স্টিকের সোনালি নড়াচড়ার কাহিনী (Story) বেরিয়ে আসে। যা আজও তাকে ফের চনমনে যুবক করে তোলে মননে। অপর প্রান্তে তাঁর সামনে বসে গৌরবোজ্জ্বল দিনের বহু অকথিত কাহিনী শোনার পুণ্য অর্জন করা যায়।
আরও পড়ুন: IND vs AUS: ধোনির ‘অভিষেক’ থেকে মহারাজের মহাপ্রস্থান, নাগপুরের মাঠে স্মৃতির ভাণ্ডার
১৯৬১ সালে ভারতের জাতীয় হকি (Indian Hockey Team) দল ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে ইতিহাস রচনা করে। সেই ঐতিহাসিক উপভোগের মুহুর্ত মাঠের মধ্যে থেকে দর্শকাসনে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। টেকচাঁদ ছিলেন সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তিনি হকির জাদুকর মেজর ধ্যানচাঁদের শিষ্য। বিখ্যাত হকি প্লেয়ার মোহর-চাঁদের গুরু। সেই টেকচাঁদ এখন জীর্ণ কুঁড়েঘরে অভিশপ্ত জীবন অতিবাহিত করে চলেছেন। মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলার বাসিন্দা টেকচাঁদের স্ত্রী প্রয়াত হয়েছেন বহুদিন আগে। দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার জন্য পাড়া- প্রতিবেশীদের দুয়ারে-দুয়ারে কড়া নেড়ে যান। ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকলে খাবার জোটে, নাহলে অনাহারে দিনের পর দিন কাটিয়ে দিতে বাধ্য হন। এমনই বলতে শোনা যায় পরিচিতদের।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, একবার এক দিনের জন্য বিধায়ক, সাংসদ হলে জীবনভর পেনশন পাওয়া যায়।। অথচ, ইতিহাস সৃষ্টিকারী একজন খেলোয়াড় দুর্বিষহ জীবন যন্ত্রণা ভোগ করে চলেছেন। দুমুঠো খাবারও যাঁর কাছে অনিয়মিত। এই বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ হোক।