কলকাতা: রাজ্যের বিরোধী দলনেতা (Leader of the Opposition) শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব (Privilege Motion) আনলেন সেচমন্ত্রী (Irrigation Minister) পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmik)। স্পিকার (Speaker) বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerji) সেই প্রস্তাব গ্রহণও করেছেন শনিবার। তিনি জানান, বিধানসভার আগামী অধিবেশনে (Next Session) প্রিভিলেজ কমিটিকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মন্ত্রী শুভেন্দুর বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগও দায়ের করেন।
শুক্রবার বিধানসভায় পঞ্চায়েত বাজেটের (Panchayet Budget) উপর বিতর্ক চলাকালীন শুভেন্দু অধিকারী সেচমন্ত্রীকে এক মাসের মধ্যে জেলে ঢোকানোর হুমকি দেন। তা নিয়ে শাসক এবং বিরোধী সদস্যদের মধ্যে তুমুল বাদানুবাদ চলে। স্পিকার বিরোধী দলনেতাকে সতর্কও করে দেন। পরে তৃণমূলের উপমুখ্য সচেতক (Deputy Chief Whip) তাপস রায় (Tapash Ray) এবং সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক প্রিভিলেজ আনার ইঙ্গিতও দেন।
শুক্রবার বিতর্কের সময় তৃণমূল সদস্য শওকত মোল্লা শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বিজেপির ৭৭ জন জিতেছিলেন। এখন কতজন আছেন, ৬৭ জন? তখন তৃণমূলে যোগ দেওয়া দুই বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী এবং বিশ্বজিত দাসকে দেখিয়ে শুভেন্দু বলেন, বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ওঁরা বলনু তো, আমরা বিজেপিতে নেই, তৃণমূলে আছি। আমি জানি, বলতে পারবেন না। এই সময় ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীর কথা টেনে আনা হয়। মন্ত্রী ও একাধিক বিধায়ক বলেন, বাড়ি গিয়ে জেনে আসবেন, শিশিরবাবু এখন কোথায় আছেন। সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককেও বলতে শোনা যায়, শিশিরবাবু কোন দলে আছেন, বলতে পারবেন?
আরও পড়ুন: Anil Ambani: করফাঁকি শো-কজ নোটিস নিয়ে বম্বে হাইকোর্টের রায়ে সাময়িক স্বস্তি আম্বানির
এতেই আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। মেজাজ হারিয়ে তর্জনী তুলে তিনি সেচমন্ত্রীকে বলেন, একমাসের মধ্যে জেলে ঢোকাব। বলে দিলাম। ঠিক একমাস। শুভেন্দুর এই হুমকি শুনেই রেগে ওঠেন শাসকদলের বিধায়ক, মন্ত্রীরা। তুমুল হইচই শুরু হয়। বিজেপি বিধায়করাও হইচই জুড়ে দেন। তখন ভাষণ দিচ্ছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। চেঁচামেচিতে তিনি ভাষণ থামিয়ে দেন। শাসকদলের বিধায়কদের বলতে শোনা যায়, এর থেকেই বোঝা যায়, বিজেপির নেতারাই সিবিআই, ইডিকে চালাচ্ছেন। তৃণমূল বিধায়করা স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে স্পিকার বলেন, বিরোধী নেতার এই আচরণ খুবই নিন্দনীয়। পার্থ তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিষটি নথিবদ্ধ করান। পরে লবিতে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং শাসকদলের উপমুখ্য সচেতক তাপস রায় সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেও মন্ত্রী তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, বিধানসভার ভিতরে যদি খোদ মন্ত্রীকেই জেলে পাঠানোর হুমকি দেন বিরোধী নেতা, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়। তাপস বলেন, আমার দীর্ঘ পরিষদীয় জীবনে এই ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। তাঁরা দুজনেই জানান, বিরোধী নেতার বিরুদ্ধে প্রিভিলেজ আনা হবে।