নদীয়া: এবার নদীয়া জেলার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান বিমলেন্দু সিংহ রায়কে সরিয়ে দিল স্কুলশিক্ষা দফতর। সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বেনিয়ম এবং দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তাই নয়, দলীয় পদ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন নেতার কাছ থেকে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক বিমলেন্দুর বিরুদ্ধে।
তার পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁকে দ্রুত সরিয়ে দেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে, আপাতত জেলাশাসক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাবেন।
অন্যান্য জেলার মতো নদীয়াতেও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রচুর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ওই জেলারই তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা নিয়োগের নামে বহু লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বলে দলের তরফ থেকেই অনেক নেতা শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এর আগে। তাপসের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতারও করে। তাপস অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, দলেরই একাংশ তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এই সূত্রেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান বিমলেন্দু সিংহ রায়ের নামও আলোচনায় উঠে এসেছে। তিনিও দলীয় নেতৃত্বের সন্দেহের তালিকায় ছিলেন।
আরও পড়ুন Burdwan: মহকুমা শাসকের হাতে ইস্তফাপত্র জমা দিলেন দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য নদীয়া জেলারই পলাশিপাড়ার বিধায়ক। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে ইডি গ্রেফতার করেছে। তিনি এখন জেলে রয়েছেন। তাঁর আমলেই প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিস্তর দুর্নীতি হয়। নদীয়া জেলাতেও টাকার বিনিময়ে বহু চাকরি হয়েছে বলে অভিযোগ। তাতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান বিমলেন্দু সিংহ রায়ের নাম জড়িয়ে গিয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। প্রাথমিক এবং এসএসসিতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক নেতা, মন্ত্রী, শিক্ষাকর্তার জেলযাত্রার ফলে চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল সরকার। তার উপর রয়েছে গরু এবং কয়লা পাচারের মামলা। তাতেও অনুব্রত মণ্ডলের মতো জাঁদরেল তৃণমূল নেতা ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন। তার মধ্যেই এবার নিয়োগ দুর্নীতিতে সরতে হল নদীয়া জেলার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান বিমলেন্দু সিংহ রায়কে। বিরোধীরা বলছেন, এবার বিমলেন্দুকে ডাকাডাকি শুরু করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।