পুরুলিয়া: পুরুলিয়া (Purulia) নামটা বললেই মনে আসে ছৌ, টুসুর (Tusu) কথা। শীতকালে টুসুর কদর থাকে। ইদানীং তা আর দেখা যাচ্ছে না। ঐতিহ্য হারাচ্ছে পুরুলিয়ার টুসু। মকর সংক্রান্তির দোরগোড়ায় এসেও টুসু অর্থাৎ চৌডল কেনা-বেচার ভিড় নেই। এমনই ছবি দেখা গেল পুরুলিয়ার ঝালদার (Jhalda) সাপ্তাহিক হাটে (Weekly Hat)।
মকর সংক্রান্তিতে পুরুলিয়ার ঐতিহ্য বাহী টুসু পরব। এই উৎসবকে ঘিরে জেলার বিভিন্ন গ্রামে এক মাস ধরে চলে টুসু গান। শিল্পীরা বাড়ীতে রাত জেগে তৈরী করেন চৌডল। পৌষ সংক্রান্তির আগে জেলার বিভিন্ন গ্রামের হাটে সেই চৌডল বিক্রি হয়। মহিলারা দল বেঁধে কিনে নিয়ে যেতেন দেখা যেতো। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই সংস্কৃতি হারাতে বসেছে। টুসুর আজ আর সেই কদর নেই। আগে একটি টুসু তৈরি করে লাভ হতো ৪০০-৬০০টাকা। সেই টুসু এখন তৈরি করতে গেলে খরচ হয় ৭০০ থেকে ৮০০টাকা। তাতে লাভের মুখ দেখা যায় না। এখন সেই টুসুর বিক্রী নেই।
আধুনিক প্রজন্ম কী তবে টুসুমুখী হচ্ছে না? এখন যুবক-যুবতীদের হাতে মোবাইল ফোন। তাতে তাঁরা নানা রকম সিনেমা, গান দেখেন ।ঐতিহ্যবাহী টুসু পরবকে ভুলতে বসেছে এই সমাজ।গত দুবছর করোনার জেরে সেভাবে পৌষ সংক্রান্তির মেলা হয়নি। এই বছর অনেকটাই স্বাভাবিক। শিল্পীরা ভেবেছিলেন এবার কদর ফিরবে। কিন্তু সেভাবে মানুষের মধ্যে সাড়া পাচ্ছেন না চৌডল (Choudal) শিল্পীরা (Artists)। তাতে তাঁরা হতাশ। তাঁদের দাবি, ‘সরকার আমাদের মতো শিল্পীদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিক। পাশাপাশি, আমাদের মতো শিল্পীদের পেনশন দেওয়ার ব্যবস্থা করুক’।
এক শিল্পী বলেন, এখন দাম পাওয়া যায় না। তাই সেরকমভাবে তৈরি করা হচ্ছে না। তবে এখনও অনেকে রয়েছেন য়াঁরা চৌডলকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। মহিলা শিল্পীরা (Woman Artists) নিজেরা তা তৈরি করে মাথায় করে গ্রামে গঞ্জে বিক্রি করছেন। তৈরিতে কাজে হাত লাগায় বাড়ির সবাই। একটি জায়গায় দেখা গেল খুদে শিশুও তার কাজে হাত লাগিয়েছে। ঝালদায় শিল্পী কালীপদ কুইরি, ক্রেতা কবিতা মাহাতোদের সঙ্গে কথা বলে টুসুর এই হাল হকিকত জানা গিয়েছে।