সিওল: উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং-উনের বোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার তথাকথিত পারমাণবিক ক্ষমতাকে প্রতিহত করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া ও আমেরিকার মধ্যে পাল্টা পারমাণবিক চুক্তি হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কিম-এর বোনের এই প্রতিক্রিয়া।
আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তারপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, মার্কিন ভূখণ্ড এবং তার বন্ধু দেশের উপর কোনও রকম আক্রমণ বা হামলার ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট দেশের শাসনের অবসান ঘটবে। বাইডেনের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে, কিম ইয়ো-জং বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের বয়স হয়েছে। তিনি ‘অতিমাত্রায় বেহিসেবি এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে সাহসী’।
গত বুধবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। পিয়ংইয়ং (Pyongyang)-এর সামরিক ও পারমাণবিক হুমকির মোকাবিলায় আরও জোরদার প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে চায় ওয়াশিংটন ও সিওল।
আরও পড়ুন: COVID-19 Update | দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজারের গণ্ডিতে
এদিকে উত্তর কোরিয়ার সুপ্রিম লিডার কিম-জং উনের বোন কিম ইয়ো-জং বলেছেন, আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তা উত্তর কোরিয়ার জন্য ক্ষতিকারক ও আগ্রাসী। এর ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নিত হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের গোড়ার থেকে উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা শুরু করেছে। বিগত সময়ে ধাপে ধাপে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তর কোরিয়া যত তাদের সামরিক শক্তির জোর দেখিয়েছে আমেরিকার সঙ্গে ততই ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার। উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা ভয় ধরিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার বন্ধুত্ব এবং উত্তর কোরিয়ার শত্রুতা কারওরই অজানা নয়।
সম্প্রতি পিয়ংইয়ং দাবি করেছে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র আমেরিকার একাধিক শহরে আঘাত আনতে সক্ষম। সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়েছে আমেরিকা। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ উত্তর কোরিয়া। প্রতিবেশী দেশের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে আগ্রাসনের ভয় পাচ্ছে সিওল। উত্তর কোরীয় সামরিক আগ্রাসন ঠেকাতে ওয়াশিংটনকে পাশে চায় তারা। এই সুযোগেই আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক ও বৈদেশিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাদের যুদ্ধ প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পারমাণবিক হামলা চালাতে সক্ষম বি-৫২ বোমারু বিমান এবং এফ-৩৫ ফাইটার জেট সহ বিভিন্ন বিমান দিয়ে সিওলকে সাহায্য করছে আমেরিকা।
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া ও আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অবনতি ২০১৯ সাল থেকে। দেশকে পারমাণবিক অস্ত্রে ক্ষমতাশীল করে তুলতে পিয়ংইয়ং যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ও পরীক্ষা শুরু করেছিল, তার বিরুদ্ধে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমী দুনিয়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা ভালোভাবে নেয়নি উত্তর কোরিয়া। এর পরপরই দুই দেশ সামরিক শক্তির প্রদর্শন করে চলেছে, বিশেষ করে উত্তর কোরিয়া। কিমের দেশের দাবি, মার্কিন আক্রমণ ঠেকাতে তারা এখন পরমাণু শক্তিধর এবং প্রয়োজনে যোগ্য জবাব দিতে প্রস্তুত।