ভুবনেশ্বর: বালেশ্বর ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা (Train Accident) চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে গোটা দেশজুড়ে। শুক্রবার সন্ধ্যা নামার ঠিক আগে বালেশ্বর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের বাহানগা বাজার (Bahanaga Bazar) স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express Accident) এবং বেঙ্গালুরু- হাওড়া এক্সপ্রেস। ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৭৫ জনের। আহত কমপক্ষে ৯০০। কিন্তু কীভাবে দুর্ঘটনার কবলে করমণ্ডল এক্সপ্রেস? যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি গাফিলতির মাশুল, উঠছে একাধিক প্রশ্ন। সিগন্যাল বিভ্রাট থেকে শুরু করে ‘ম্যান মেড তত্ত্ব’ একাধিক কারণ খাড়া করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আর এই যাবতীয় প্রশ্নের উত্তরে অনেকটাই সাহায্য করতে পারে ডেটা লগার (Data Logger) যন্ত্র! বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এই ডেটা লগার যন্ত্র অনেকটাই ‘ব্ল্যাক বক্স’-এর মতোই। উল্লেখ্য, প্লেন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ‘অজ্ঞাত’ প্রশ্ন পুনরুদ্ধারে অন্যতম বড় ভূমিকা নেয় ‘ব্ল্যাক বক্স’।
এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের প্রাক্তন মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “বিমানে যেমন ‘ব্ল্যাক বক্স’ থাকে তেমনই ট্রেনের ক্ষেত্রে থাকে ডেটা লগার যন্ত্র। এক্ষেত্রে ট্রেনের স্পিড কত থাকবে, কোন সময় তা ব্রেক দিয়েছিল এই সমস্ত টেকনিক্যাল বিষয়গুলির তথ্য সেখান থেকে পাওয়া যাবে।” এখনও প্রশ্ন হচ্ছে, এই ডেটা লগার যন্ত্র পাওয়া গেলেই কি দুর্ঘটনার কারণ প্রকাশ্যে আসতে চলেছে? এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সমীর গোস্বামী বলেন, “পুরো কারণ সামনে আসবে তা নয়। তবে কিছু তথ্য সামনে আসবে। তবে তা অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যাবে কিনা তা একটা বড় প্রশ্ন।”
তিনি আরও বলেন, “করমণ্ডল এক্সপ্রেস যাচ্ছিল মেন লাইন দিয়ে। সেখানে আপ এবং ডাউন দুটি মেন লাইন রয়েছে। সেই সময় ট্রেনটির স্পিড ছিল প্রায় ঘণ্টায় ১২৬ কিলোমিটার। মালগাড়িটি লুপ লাইনে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে লুপ লাইনে দেওয়া হল। চালক যখন দেখতে পান তখন ট্রেনটি স্পিডে লুপ লাইনে ঢুকছে। সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মত অবস্থায় ছিল না।”
আরও পড়ুন:Train Cancelled | করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার জেরে আজও বাতিল হল বহু ট্রেন, দেখে নিন তালিকা
ঠিক কী কারণে এই দুর্ঘটনা? তা এখনও স্পষ্ট নয়। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার নেপথ্যে মূল কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে তাও জানা সম্ভব হয়েছে। রেলের তদন্তকারী দলের প্রধান রেল সুরক্ষা কমিশনার এএম চৌধুরী জানিয়েছেন, এখনও তদন্ত চলছে। সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই রকম বড় মাপের দুর্ঘটনায় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হবে না। তাই ২-৩ সময় লাগবে আরও।” তিনি আরও বলেন, আরও জানান, “বালেশ্বরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ইন্টারলকিং সিস্টেমের পাশাপাশি সিগন্যালিংও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বারবার। তদন্ত শেষে রেল বোর্ডের হাতে রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে।”