নয়াদিল্লি: আশঙ্কা ছিলই। রাজ্যগুলিকে সতর্কও করেছিল কেন্দ্র। শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। ভারতে (Omicron India) হানা দিল ওমিক্রন (Omicron)। এ পর্যন্ত দু’জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান মিলেছে। আক্রান্ত দু-জনেই কর্নাটকের (Karnataka) বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব লভ আগরওয়াল জানিয়েছে, ওমিক্রনে আক্রান্তদের মধ্যে একজনের বয়স ৪৬, অপর জন ৬৬ বছর বয়সি। যদিও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ওই দুই ব্যক্তির সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদেরও ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁরাও নতুন ভাইরাসে সংক্রামিত কি না, নিশ্চিত হতে জিনম সিকোয়েন্স টেস্ট করতে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব জানান, আক্রান্তদের ২ জনই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছেন। এই দু’জনের কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়া ছিল না, তা এখনও জানা যায়নি। সূত্রের খবর, কর্নাটকে আক্রান্তরা ১১ ও ১২ নভেম্বর বেঙ্গালুরুতে ফিরেছিলেন। মোট ১০ জন বিমানযাত্রীর দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে জিনোম সিকোয়েন্সিং-এর জন্য পাঠানো হয়েছিল। এ ছাড়া ১ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২ ডিসেম্বর সকাল আটটা পর্যন্ত ৭,৯৭৬ জন বিমানযাত্রীর আরটি পিসিআর টেস্ট করা হয়েছে।
নতুন কোভিড ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে, আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য দেশে কঠোর নিয়ম মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হয়েছে। ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ভাবে কোভিড পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আইসিএমআর-এর ডিজি বলরাম ভার্গব আশ্বস্ত করে জানান, অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে, সচেতন হতে হবে। কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে। কর্নাটকের যে ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের উপসর্গও সামান্য।
আরও পড়ুন: Cyclone Jawad: ঘূর্ণিঝড় নিয়ে বৈঠক মোদির
দক্ষিণ আফ্রিকায় খোঁজ মেলা করোনার নতুন স্ট্রেন ওমিক্রন নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কিত সারা বিশ্ব। ২৯টি দেশের ৩৭৩ জন এ পর্যন্ত আক্রান্ত। সেই ২৯টি দেশের মধ্যে ভারতের নামও এ বার ঢুকে পড়ল। নতুন কোভিড ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে, আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য দেশে কঠোর নিয়ম মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হয়েছে। ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ভাবে কোভিড পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছিল, ওমিক্রনের ঝুঁকি রয়েছে এরকম দেশগুলি থেকে ভারতে আসা ১১টি ফ্লাইটের ৩৪৭৬ জন যাত্রীর কোভিড পরীক্ষার পরে বুধবার ছ’টি কোভিড কেস পাওয়া গিয়েছে। যাদের নমুনাগুলি জিনোমি সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ওমিক্রন ঠেকাতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিধির বাইরেও মহারাষ্ট্র সরকার বৃহস্পতিবার নতুন কোভিড বিধি ঘোষণা করেছে। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে এদিন জানান, মহারাষ্ট্রেই প্রথমে কোভিডের সংক্রমণ হয়েছিল। এই রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। তাই আমাদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে। মহারাষ্ট্র সরকার ছ’টি দেশকে ‘আলট্রা রিস্ক নেশন’ বলে চিহ্নিত করেছে। ওই দেশগুলি থেকে কেউ মহারাষ্ট্রে এলে, তাঁদের সরকারি কোয়ারান্টাইন সেন্টারে থাকতে হবে। ‘আলট্রা রিস্ক’ দেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও রয়েছে বটসোয়ানা, লাসোথো, জিম্বাবোয়ে এবং এসওয়াতিনি।
মহারাষ্ট্র সরকারের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, উল্লিখিত দেশগুলি থেকে কেউ রাজ্যে ফিরলে তাঁকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিমানবন্দরে নামিয়ে সাত দিন সরকারি কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখা হবে। তার পরই আরটি পিসিআর টেস্ট করা হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ হলে তাঁরা যেখানে খুশি যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন: Omicron: ওমিক্রনে আক্রান্ত? কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন?
উল্লিখিত এই ছ’টি দেশ বাদে অন্যান্য যে দেশে ওমিক্রন দেখা দিয়েছে, সেখান থেকে যাত্রীরা নামলেও আরটি পিসিআর টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। বাড়িতেই সাত দিন তাঁরা কোয়ারান্টাইনে থাকবেন। আট দিনের মাথায় ফের তাঁদের কোভিড টেস্ট করাতে হবে।এ ছাড়া ভারতের অন্য রাজ্য থেকে মুম্বইয়ে এলে তাঁদেরও ডবল ভ্যাকসিনেশনের প্রমাণ দেখাতে হবে। এদিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক আবারও জানিয়েছে, গণজমায়েত করা যাবে না। ওমিক্রনের সংক্রমণ চেন ভাঙতে হলে এটা জরুরি। সেইসঙ্গে টিকাকরণের গতি বাড়ানোর ওপরেও জোর দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।