কলকাতা: সল্টলেকের হরিয়ানা বিদ্যামন্দিরের (Hariyana Vidyamandir) অষ্টম শ্রেণির (Class VIII) ছাত্রী সুদেষ্ণা বসু (Sudeshna Basu) কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে জীবনের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে। গত ২০ জানুয়ারি সে মিজলস রুবেলা টিকা নেয়। তারপর থেকেই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শুরু হয় প্রবল শ্বাসকষ্ট এবং কাশি। পারিবারিক চিকিৎসকের পরামর্শমতো বাড়ির লোকজন সুদেষ্ণাকে ভর্তি করেন ওই বেসরকারি হাসপাতালের আইসিসিইউতে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আর একটি বেসরকারি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানকার ডাক্তাররা জানান, সুদেষ্ণা মাল্টিলোবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। দুটি ফুসফুসই ক্ষতিগ্রস্ত। সে এখন একমো সাপোর্টে রয়েছে।
বেসরকারি ওই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল জানিয়েছে, চিকিতসার জন্য প্রায় ২৬ লাখ টাকার প্রয়োজন। সুদেষ্ণার বাবা সুকান্ত বসু একটি বিমা সংস্থার এজেন্ট। কোনও রকমে এখন পর্যন্ত আট লাখ টাকা সংগ্রহ করতে পেরেছেন। কিন্তু বাকি টাকা কোথা থেকে পাবেন, সেই চিন্তায় রাতের ঘুম ছুটেছে বসু পরিবারের।
আরও পড়ুন: Assam Child Marriage: অসমে ৩১ শতাংশ মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার, বলছে সমীক্ষা
সুদেষ্ণার মা দেবাঞ্জনা সাধারণ গৃহবধূ। আচমকাই পরিবারে এমন বিপর্যয় নেমে আসায় তিনিও নাওয়াখাওয়া ভুলেছেন। দেবাঞ্জনা বলেন, কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের একসঙ্গে এত টাকা কোথা থেকে আসবে, জানি না। তবে ভরসার কথা একটাই। মেয়ে চিকিতসায় সাড়া দিচ্ছে। দেবাঞ্জনা বলেন, ওর চোখ দিয়ে জল পড়ছে, ডাকলে চোখ খোলার চেষ্টা করছে। আমার হাতের আঙুল চেপে ধরছে। তিনি জানান, হাসপাতালের ডাক্তাররা চেষ্টার কোনও খামতি রাখছেন না। মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠুক, এটাই চায় বসু পরিবার।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের একমো বিশেষজ্ঞ দীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, সুদেষ্ণা চিকিতসায় সাড়া দিচ্ছে। রাইলস টিউবের মাধ্যমে খেতে পারছে। আর কিছুদিন একমো সিস্টেমে থাকলে হয়ত অবস্থার উন্নতি হবে। আমরা আশা করি, ও ভালো হয়ে উঠেবে।
ডাক্তারদের ভরসায় বুক বেঁধেছেন সুকান্ত-দেবাঞ্জন। কিন্তু সমস্যা একটাই। এত টাকা কোথায়া পাওয়া যাবে। সুদেষ্ণার স্কুলের বন্ধুরাও উদ্বিগ্ন। ওরা আশায় দিন গুনছে, কবে সুদেষ্ণা আবার স্কুলে আসবে। ক্লাসের সহপাঠীরা অপেক্ষায়, কবে ও এসে আবার তাদের পাশে বসবে। কলকাতা টিভি-ও সুদেষ্ণার সুস্থতা কামনা করছে।