নয়াদিল্লি: সব জল্পনার অবসান। কর্নাটকের কুর্সিতে বসতে চলেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া। শনিবার বিপুল জয়ের তিনদিন পর শেষমেশ মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে রাজ্যের দলীয় সভাপতি ডি কে শিবকুমারকে পিছনে ফেলে দিলেন সিদ্দারামাইয়া। প্রথম থেকে গররাজি হলেও অবশেষে সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর পরামর্শ মেনে তিনি পেতে চলেছেন উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ।
আগামিকাল, বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ সিদ্দারামাইয়া ও নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবে। রাজ্য সরকারের তরফে এই মর্মে আমন্ত্রণপত্রও তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে রাজ্যপাল থওয়রচাঁদ গেহলট কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। ওইদিনই নবনির্বাচিত ১৩৫ জন কংগ্রেস বিধায়কের বৈঠকে নতুন দলনেতা নির্বাচনের পরেই শপথ অনুষ্ঠান হবে।
আরও পড়ুন: Shivakumar-SC | শিবকুমারের সুপ্রিম-স্বস্তি, সিবিআইয়ের আর্জি আপাতত মুলতুবি ১৪ জুলাই পর্যন্ত
রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের ইতিমধ্যেই শপথ অনুষ্ঠানস্থল তৈরির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেঙ্গালুরু পুলিশও স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে বুধবারই। অন্যদিকে, সিদ্দারামাইয়া মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন এই খবর পাওয়া মাত্রই তাঁর অনুগামীরা উৎসবে মেতে ওঠেন। বেঙ্গালুরুতে সিদ্দারামাইয়ার বাড়ির সামনে হবু মুখ্যমন্ত্রীর পোস্টারে দুধ ঢেলে স্নান করাতে শুরু করেন। এদিন দুই নেতাকেই ১০ জনপথে ডেকে পাঠান কংগ্রেসের সর্বময় নেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। একান্ত সোনিয়া অনুগামী বলে পরিচিত শিবকুমারকে সোনিয়া আশ্বাস দিয়ে বলেন, আত্মত্যাগ এবং আনুগত্য কখনই বিফলে যেতে পারে না। তা অবশ্যই পুরস্কৃত হওয়া উচিত।
মঙ্গলবারের পর বুধবার সকাল থেকেই ফের তৎপরতা শুরু হয়ে যায় মুখ্যমন্ত্রী মুখ নির্বাচনে। এদিনের কেন্দ্রস্থল ছিল ১০ জনপথ গান্ধী পরিবারের বাসভবন। দলের শীর্ষ নেতারা সহ খোদ সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ও শিবকুমার। শুরু থেকেই বিধায়কদের পাল্লা ভারী ছিল তাঁর দিকেই। অন্যদিকে, সোনিয়া গান্ধীর দীর্ঘদিনের বিশ্বাসভাজন এবং অনুগত নেতা শিবকুমার। এই দুইয়ের টানাপোড়েন ছাড়াও রাজ্যের বিশাল সংখ্যক লিঙ্গায়ত ও ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের সমর্থন রয়েছে শিবকুমারের দিকে। তাই এককথায় তাঁকে ছবি থেকে মুছে ফেলতেও পারছিল না দল।
তাই আপাতত দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারসাম্য বজায় রাখতে কাউকেই অখুশি করার নীতি নেওয়া যাবে না। তাই সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিকেএসকে উপমুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার দিয়ে নিদেনপক্ষে এখনকার মতো সরকার গঠন করে ফেলতে চায় কংগ্রেস হাইকমান্ড।