কলকাতা: বুধবার কলকাতায় একাধিক হাই ভোল্টেজ রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। কাছাকাছি এলাকায় একই সঙ্গে এতগুলি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে গোলমালের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরই শহিদ মিনার (Shahid Minar) চত্বরে তৃণমূলের ছাত্র (TMCP) ও যুব সংগঠনের সভাস্থল ও ডিএ-র দাবিতে (DA Protest) আন্দোলনকারীদের ধরনা মঞ্চের মাঝে দেওয়া হয়েছে টিনের ব্যারিকেড। বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ারও (Watch Tower)। মঙ্গলবার বিকেলে সভাস্থল পরিদর্শন করেন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা। উপস্থিত ছিল সেনাবাহিনীও।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ধরনাকে কেন্দ্র করে ধর্মতলা চত্বর সহ রেড রোড নিরাপত্তায় মুড় ফেলা হয়েছে। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের শহিদ মিনারের সভার জন্য একাধিক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারকে মোতায়েন করা হয়েছে। থাকছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার একজন অফিসার, ২ জন যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার, ৪ জন ডিসি। এছাড়াও ৫০০-র বেশি পুলিশ মোতায়েন থাকছে সভাস্থলে। কোনও অপ্রিতীকর ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য ৩০টি সিসিটিভি ক্যামেরা মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। এছাড়া আরও বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে বলে আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, ডিএ-র ধরনা মঞ্চে থাকছেন ডিসি পদমর্যাদার অফিসার একজন। এছাড়াও বেশ কিছু পুলিশ মোতায়েন থাকবে শহিদ মিনার।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | Dharna | আজ যত কাণ্ড কলকাতায়, একাধিক কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে
এদিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ধরনা দেবেন আম্বেদকরের মূর্তির নীচে। সেখানে নিরাপত্তায় উপস্থিত থাকবেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আজ বেলা ১২টা নাগাদ রেড রোডে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে বি আর আম্বেদকরের মূর্তির সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ৪৮ ঘণ্টার জন্য ধরনায় বসছেন। অদূরেই শহীদ মিনার ময়দানে তৃণমূল ছাত্র (TMCP) এবং যুব সংগঠনের সমাবেশ। আদালত শর্ত সাপেক্ষে ওই সভার অনুমতি দিয়েছে। ওই সভাস্থলের ১০০ মিটার দূরে ডিএর দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ অবস্থান চালাচ্ছে ৬২ দিন ধরে। তাদের পুলিশ দুদিন সেখানে বসতে বারণ করেছে। মঞ্চের নেতারা জানান, আদালতের অনুমতি নিয়ে তাঁরা অবস্থান করছেন। অবস্থান তোলার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তারা আদালতে তৃণমূলকে সভা করতে না দেওয়ার আবেদন করে। তাতে আদালত সাড়া দেয়নি। তবে একই সঙ্গে একাধিক দল বা সংগঠনকে কেন একই জায়গায় পুলিশ কর্মসূচি করতে অনুমতি দিল, আদালত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আজ দুপুরেই বামফ্রন্ট নিয়োগ দুর্নীতি এবং রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে মিছিল করবে পারক সার্কাস পর্যন্ত। আবার প্রায় একই সময়ে বিজেপি শ্যামবাজারে অবস্থানে বসবে। সব মিলিয়ে আজ কলকাতার একটা বড় অংশ অচল হয়ে যেতে পারে বলে পুলিশের আশঙ্কা।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আজ হাঙ্গামা করতে পারে। তৃণমূলের সভা থেকে যদি সরকারি কর্মীদের গায়ে হাত পড়ে, তাহলে আজ বিকেলের পরে কলকাতা অচল করে দেওয়া হবে। তৃণমূল মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, বিজেপি জানল কী করে যে তৃণমূল হাঙ্গামা করবে। তাহলে কি ওরাই কোনও পরিকল্পনা করেছে? সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, আমাদের মধ্যে নাকি সরকারের লোক ঢোকানো আছে। এমনটাই বলা হচ্ছে। এটা আমাদের ভাবাচ্ছে।