বারাসত: আমডাঙ্গা (Amdanga) আওয়ালসিদ্ধিতে মঙ্গলবার রাতে এক তৃণমূল কর্মী (TMC Worker) গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত আটটা নাগাদ জনা তিরিশেক লোক ওই এলাকায় জড়ো হয়। তাদের মধ্যে থেকে কেউ আব্দুল জরিম (Abdul Jorim) নামে ওই যুবককে গুলি করে। দুটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তৃতীয় গুলিটি জরিমের পায়ে লাগে। তাঁকে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেশি রাতে এলাকায় গিয়ে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক (MLA) রফিকুর রহমান (Rafikur Rahman)। তিনি তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢুকতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। তারপর দলেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারি শুরু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জসিম সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। তবে সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে আইএসএফের যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। সেই কারণেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে বলে শাসকদলের একাংশের অভিযোগ। এই ঘটনা ঘিরে রাতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ টহল দিতে শুরু করে।
বুধবার কলকাতায় (Kolkata) একাধিক হাই ভোল্টেজ রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। কাছাকাছি এলাকায় একই সঙ্গে এতগুলি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে গোলমালের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যে তৃণমূল অভিযোগ করেছে, এদিন বিজেপি গোলমাল পাকাতে পারে। পাল্টা বিজেপির অভিযোগ, শাসকদল ঝামেলা করতে পারে। আজ বেলা বারোটা নাগাদ রেড রোডে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে বি আর আম্বেদকরের মূর্তির সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৪৮ ঘন্টার জন্য ধরনায় বসছেন। অদূরেই শহীদ মিনার ময়দানে তৃণমূল ছাত্র এবং যুব সংগঠনের সমাবেশ। আদালত শর্ত সাপেক্ষে ওই সভার অনুমতি দিয়েছে। ওই সভাস্থলের ১০০ মিটার দূরে ডিএর দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ অবস্থান চালাচ্ছে ৬২ দিন ধরে। তাদের পুলিশ দুদিন সেখানে বসতে বারণ করেছে। মঞ্চের নেতারা জানান, আদালতের অনুমতি নিয়ে তাঁরা অবস্থান করছেন। অবস্থান তোলার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তারা আদালতে তৃণমূলকে সভা করতে না দেওয়ার আবেদন করে। তাতে আদালত সাড়া দেয়নি। তবে একই সঙ্গে একাধিক দল বা সংগঠনকে কেন একই জায়গায় পুলিশ কর্মসূচি করতে অনুমতি দিল, আদালত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আজ দুপুরেই বামফ্রন্ট নিয়োগ দুর্নীতি এবং রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে মিছিল করবে ধর্মতলা পর্যন্ত। আবার প্রায় একই সময়ে বিজেপি শ্যামবাজারে অবস্থানে বসবে। সব মিলিয়ে আজ কলকাতার একটা বড় অংশ অচল হয়ে যেতে পারে বলে পুলিশের আশঙ্কা।
আরও পড়ুন: Pharma Companies Lose Licence | ১৮টি ওষুধ কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়া হল
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আজ হাঙ্গামা করতে পারে। তৃণমূলের সভা থেকে যদি সরকারি কর্মীদের গায়ে হাত পড়ে, তাহলে আজ বিকেলের পরে কলকাতা অচল করে দেওয়া হবে। তৃণমূল মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, বিজেপি জানল কী করে যে তৃণমূল হাঙ্গামা করবে। তাহলে কি ওরাই কোনও পরিকল্পনা করেছে? সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, আমাদের মধ্যে নাকি সরকারের লোক ঢোকানো আছে। এমনটাই বলা হচ্ছে। এটা আমাদের ভাবাচ্ছে। পুলিশ অবশ্য আয়োজনের কোনও ত্রুটি রাখছে না। পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে আজ বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য। ময়দানে তৃণমূল এবং সরকারি কর্মচারীদের সভাস্থলের মাঝে টিনের ব্যারিকেড লাগানো হয়েছে। আদালত বলেছে, পুলিশকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।