নয়াদিল্লি ও মুম্বই: মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে সুপ্রিম রায়ের পর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেন, নৈতিক কারণে তিনি ইস্তফা দিয়েছিলেন। শিবসেনা যাদের সবকিছু দিয়েছিল, তারাই বেইমানি করে আমাকেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে বলেছিল। আমি তাই নিজেকে সরিয়ে নিই। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তিনি আরও বলেন, আমি যেমন পদত্যাগ করেছি, একনাথ শিন্ডেকেও তেমনভাবেই ইস্তফা দেওয়া উচিত। রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত প্রশ্ন তোলায় ঠাকরে একথা বলেন। উদ্ধবের দাবি, নৈতিক কারণে এই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে এক সাংবাদিক বৈঠকে উদ্ধবের কথায়, এই অবৈধ সরকার এবং একনাথ শিন্ডেকে নৈতিক কারণে ইস্তফা দেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: Poorva Express | ফের রেল চলাচলে বিপত্তি, চাকার পাশ থেকে ধোঁয়া পূর্বা এক্সপ্রেসে, আতঙ্কে যাত্রীরা
অপরদিকে রায়ের পরপরই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ও উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে ফড়নবিশ বলেন, ইস্তফার কোনও প্রশ্নই নেই। মহারাষ্ট্র সরকার সাংবিধানিক এবং আইনি। যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ঠাকরে বলেছেন তিনি নৈতিক কারণে ইস্তফা দিয়েছেন। আমি যদি তাঁকে প্রশ্ন করি, আপনার এই নীতি-নৈতিকতা কোথায় ছিল যখন আপনি বিজেপির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে কংগ্রেস এবং এনসিপি-র হাত ধরেছিলেন? শিন্ডে বলেন, সত্যের জয় হয়েছে। আমাদের সরকারকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ বলে উদ্ধব ঠাকরে আত্মতুষ্টি পেতে চাইছেন। যেখানে সর্বোচ্চ আদালত যাবতীয় সংশয় মুক্ত করে দিয়েছে। ফড়নবিশেরও দাবি, উদ্ধব ভয় পেয়েছিলেন। তাই ইস্তফা দিয়েছিলেন। নৈতিকতার কোনও বিষয় নয়, উনি জানতেন তাঁর আর সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এই জয়কে তিনি গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জয় বলে ব্যাখ্যা করেন।
এদিকে, এদিন সুপ্রিম কোর্ট তৎকালীন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারিকে তাঁর ভূ্মিকা ও আচরণের জন্য তুলোধনা করে। সে প্রসঙ্গে প্রাক্তন রাজ্যপাল কোশিয়ারি বলেছেন, আমি নিজেকে যাবতীয় রাজনৈতিক ইস্যু থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলাম। রাজ্যপাল সম্পর্কে উদ্ধব আরও এক ধাপ এগিয়ে প্রশ্ন তোলেন, আর কি রাজ্যপাল পদের কোনও প্রয়োজন আছে, এনিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপালদের যেখানে দাসত্ববৃত্তি করানো হচ্ছে, তখন এই পদের মানমর্যাদা আর কোথায় থাকছে!
তবে উদ্ধবের বিনা যুদ্ধে হার মেনে নেওয়াকে ভালো চোখে নেননি মারাঠা স্ট্রংম্যান শরদ পাওয়ারও। তিনি আত্মজীবনীতে সেকথা উল্লেখও করেছেন।এনসিপি প্রধান পাওয়ারে মতে, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যে দৃঢ়তা ও দক্ষতা থাকা উচিত তা যথেষ্ট ছিল না উদ্ধব ও তাঁর মন্ত্রিসভার অনেকের। তিনি আরও লিখেছেন, একটা মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বিজেপিকে ঠেকাতে মহাবিকাশ আঘারি গড়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি যে, শিবসেনার ভিতরেই উদ্ধব ঠাকরেকে মুখ্যমন্ত্রী করা নিয়ে এত অসন্তোষ রয়েছে। এমনকী শিবসেনার নেতারাও তা টের পাননি।