আবারও মস্কোর পাশে নয়াদিল্লি। ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল দখলে আগ্রাসী রুশ হামলার কড়া নিন্দা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় নেওয়া প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটিতে বিরত থাকল ভারত। অবশ্য ১৪৩টি সদস্য রাষ্ট্র পক্ষে ভোট দেওয়ায় সে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয় ৫টি দেশ। ভারত সহ ৩৫টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। অবশ্য ওই প্রস্তাবে রাশিয়ার পক্ষে থাকলেও ইউক্রেনে বেআইনি রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নেওয়া প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি গোপন ব্যালটে হোক পুতিনদের এহেন উদ্যোগ সমর্থন করেনি ভারত।
এদিকে সাধারণ সভায় ভোটাভুটির আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে নেওয়া একই ধরণের প্রস্তাবে রাশিয়া ভেটো দিলে সেখানেও ভোটাভুটিতে বিরত থাকে ভারত। ইতিমধ্যে তথাকথিত গণভোটের অজুহাত দেখিয়ে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করে রাশিয়া। গত সপ্তাহে বিধ্বংসী রুশ হামলায় যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয় ইউক্রেনের বেশ কিছু এলাকা। অবশ্য তার আগে ক্রিমিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী সেতুতে বিস্ফোরণ ঘটার ফলে বেশ বিপাকে পড়ে রাশিয়া।
মস্কোর ওই পদক্ষেপের নিন্দা করে খসড়া প্রস্তাব পেশ হয় রাষ্ট্রসংঘে। আর সেই রুশ বিরোধী প্রস্তাবের ভোটাভুটি থেকে সরে দাঁড়ায় ভারত। যদিও তার দুদিন আগে সোমবার গোপন ব্যালটে ভোটগ্রহণ প্রসঙ্গে মস্কোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ভোট দিয়েছিল নয়াদিল্লি। রাশিয়ার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রকাশ্যে ভোটাভুটির প্রস্তাব আনে আলবানিয়া। সেই প্রস্তাব সমর্থন করে ভারত। জেলেনস্কির দেশে এই আক্রমণের জন্য সর্বোত ভাবে ইউক্রেনকে দায়ী করে বিবৃতি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। কারণ তাঁর দাবি, ইউক্রেনের জন্যই ক্রিমিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী সেতুতে হামলা হয়েছে। ওই আক্রমণের কড়া জবাব দেবে মস্কো। সে ঘোষণার পরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ-সহ নানা শহরে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। মূলত জনবহুল এলাকাগুলি লক্ষ্য করেই ছোঁড়া হয় রুশ মিসাইল। সে হামলয় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে ইউক্রেনে গাজোয়ারি করে গণভোটের ডাক দেয় রাশিয়া। তারপর বিবৃতি জারি করে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল দখল করার কথা ঘোষণা করেন পুতিন। একইসঙ্গে রাশিয়ার তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, দখল হওয়া চারটি এলাকা ডোনেতস্ক, লুহানসক, খেরসন আর জাপরজিজিয়া এখন থেকে রাশিয়ার অংশ। কোনও মতেই এই অঞ্চলগুলি হাতছাড়া করা হবে না। প্রত্যাশামতই রাশিয়ার ওই পদক্ষেপের নিন্দায় সরব হয় বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। আর ইউক্রেনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, দখল করা ওই চারটি অঞ্চল তাঁদের দেশের অংশ। কোনওমতেই ওই এলাকায় ভিন দেশের শাসন মেনে নেওয়া হবে না। আর রাশিয়ার ভূমিকার নিন্দা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন রুশ আগ্রাসন যুদ্ধের পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে।