কলকাতা: উপস্থিতি নিয়ে নবান্নের (Nabanna) কড়া হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে চলছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ধর্মঘট (WB State Govt Employees Strike)। কলকাতা, বিধাননগর, হাওড়া-হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দুই দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিংসহ সর্বত্র ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন বাম সমর্থিত সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের (Sangrami Joutho Mancha) কর্মীরা। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) কর্মচারীরাও এই কর্মবিরতিতে যোগ দিয়েছেন। যার ফলে ব্যাহত কলকাতা হাইকোর্টের বিচার পরিষেবা। হাইকোর্টের বি গেটে কর্মচারীরা বিক্ষোভ দেখিয়ে স্লোগান দেন।
বিভিন্ন জেলায় সরকারি দফতরে শুক্রবার উপস্থিতির হার কেমন? তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নবান্ন। নবান্নের তরফে একটি “অ্যাটেনড্যান্স ফরম্যাট” বিভিন্ন জেলাগুলিকে দেওয়া হয়েছে। এদিন মোট চারবার ই-মেল করে জেলাগুলিকে জানাতে হবে উপস্থিতির হার। পাশাপাশি কোন কোন সরকারি আধিকারিকরা গরহাজির, তাঁদের নাম সহ পদও পাঠাতে বলল নবান্ন। এত কিছু সত্ত্বেও দমানো সম্ভব হয়নি রাজ্য কর্মীদের। বিভিন্ন দফতর, আদালত, স্কুল-কলেজে উপস্থিতির হার নামমাত্র।
আরও পড়ুন: IPS Posting: রাজ্যজুড়ে আইপিএস পদে রদবদল, কলকাতা পুলিশের নতুন গোয়েন্দা প্রধান কে?
এদিনই নবান্নে আইডি কার্ড ছাড়া প্রবেশে ব্যাপক কড়াকড়ি সরকারের। অশান্তির আশঙ্কায় নবান্নের বিভিন্ন গেটে এমনটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি কর্মচারীকে দেখাতে হচ্ছে পরিচয়পত্র। তারপরই মিলছে নবান্নে ঢোকার অনুমতি। এদিকে, এদিনের ধর্মঘটকে স্বাগত জানিয়ে ধর্মঘটীদের অভিনন্দন জানালেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
ডিএ-র (DA) দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টার যে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন সরকারি কর্মচারীরা, তাতে যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে কলকাতা পুরসভায়। এদিন সকাল থেকেই যৌথ মঞ্চের কর্মীরা প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন হাতে এই কর্মবিরতি বা ধর্মঘটকে সফল করার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়ে রয়েছেন।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বক্তব্য, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বর্তমান শাসকদলের নেতাকর্মীরা একাধিক ধর্মঘট, বনধ, কর্মবিরতি করে অরাজকতা করে এসেছিল। ক্ষমতায় আসার পরেও একাধিক এ ধরনের বন্ধ ধর্মঘট, আইন অমান্য, কর্মবিরতিতে শামিল হয়েছিল। কিন্তু, এখন বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের কর্মসূচির ডাক দেওয়ার বিরোধিতা করছে রাজ্যের শাসকদল বা রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের চোখরাঙানি মানবেন না সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কর্মীরা।
এদিন সকাল থেকে বিকাশ ভবনে (Vikash Bhavan) কর্মীরা আসতে শুরু করে। ধর্মঘটের সমর্থনে যাঁরা তাঁরা ব্যানার হাতে গেটের মুখে দাঁড়িয়ে আগত কর্মীদের তাঁদের ধর্মঘটে শামিল হতে বা সমর্থন করতে জানানো হয়। তাঁদের দাবি, অস্থায়ী কর্মীরা বেশি এসেছেন।
একই দাবিতে সকাল থেকে নবমহাকরণের (Naba Mahakaran) সামনে প্ল্যাকার্ড-পোস্টার হতে স্লোগান দিয়ে ধর্মঘট সফল করার ডাক সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের প্রতিনিধিদের। যদিও নবমহাকরণে ধর্মঘটে মিশ্র প্রভাব পড়ল। ধর্মঘট করলে সার্ভিস রুল ব্রেক করার হুমকিকে বেআইনি বললেন ধর্মঘটীরা। তাঁদের দাবি, একদিনের টাকা কাটা যেতে পারে, কিন্তু কর্মজীবন থেকে একটা দিন কখনই বাদ দেওয়া যায় না। আর যদি এমনটা সরকার করে তাহলে হাইকোর্টে মামলা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিলেন ধর্মঘটীরা।