এতদিন ছিল শুধু অ্যাকনে, এ বার কোভিড নিয়ে এল মাস্কনে। পর-পর দু’বছর কোভিডের আতঙ্কে মাস্কে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি আমরা সকলেই। রাস্তাঘাটে বেরোলেই চোখে পড়ে মেট্রোতে বসে, বাসের হাতলে হাত রাখার পর হাত স্যানিটাইজ করে নিচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। কিন্ত এই অতি সাবধানতায় সমস্যা বাড়ছে অপরদিকে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে ও বর্ষাকালে মাস্ক খুললে ঢাকা অংশে দেখা যাচ্ছে গোটা বা ব্রণ। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকার ফলে ঢাকা অংশে ঘাম ও তেল জমে ময়লা ও ব্যাক্টেরিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।
মাস্কে ঢাকা পড়ে অনায়াসে মাথাচাড়া দিচ্ছে এই সব জীবাণু। এর ফলে ত্বকে চুলকানি ও জ্বালার মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
মাস্কনে থেকে রেহাই পেতে কী করবেন?
১. এই ধরনের সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেতে মাস্ক পরতে হবে বেছে। নিশ্বাস নিতে সুবিধে হয় এমন মাস্ক পরুন। সুতির মাস্ক পরতে পারেন। সংক্রমণের ভয় থাকলে ‘ডাবল মাসকিং’ করতে পারেন। সুতির মাস্কে ঘাম কম হওয়ায় রোমকূপের ছিদ্রে ঘাম বা ময়লা সহজে জমে না। সুতির কাপড়ের মাস্কে ঘষা কম লাগে৷ এর ফলে ত্বকে জ্বালার সম্ভাবনাও অনেকটাই কম। তবে দীর্ঘক্ষণ মাস্ক পরে থাকলে ত্বকের উপর তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। সেক্ষেত্রে ত্বকের পর্যাপ্ত যত্ন নিতে হবে।
২. প্রত্যেকবার পরিষ্কার মাস্ক পরবেন। কোনওমতেই, না ধুয়ে একই মাস্ক দ্বিতীয়বার ব্যবহার করবেন না। নিয়ম মেনে প্রত্যেকবার মাস্ক পরে তা খুলে রাখার সময় ভাল করে ধুয়ে নিন।
৩. মুখের ব্রণ বা গোটাতে বারবার হাত দেবেন না। বারবার হাত দিলে আরও বাড়তে পারে জ্বালা-যন্ত্রণা।
৪.ত্বকের যত্ন নিন। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মুখ ভাল করে ধুয়ে নিন বা ক্লেনজার দিয়ে মুছে নিন। মুখ পরিষ্কারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন মাইল্ড ক্লেনজার বা ফেস ওয়াশ। কড়া কেমিক্যালসের হিতে বিপরীত হতে পারে। মুখ পরিষ্কার করে টোনার লাগিয়ে নিন। এর ফলে মুখের অতিরিক্ত ঘামের হাত থেকে রেহাই পাবেন।
৫. মাস্কনে থাকাকালীন বিজ্ঞাপন দেখে বাজার চলতি নতুন কোনও প্রোডাক্ট চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করবেন না। তবে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। সমস্যা বাড়লে বা প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই মুখে নতুন কোনও ক্রিম ব্যবহার করবেন।
৬. একইভাবে, এই অবস্থায় বাড়ির বাইরে বেরোতে হলে সানস্ক্রিনের ব্যবহার ভুললে চলবে না। ক্ষতিকারক UVA ও UVB রশ্মির হাত থেকে বাঁচতে এর কোনও জুড়ি নেই। পাশাপাশি, সানস্ক্রিন লাগালে ধুলোবালি থেকেও রেহাই পাবে আপনার ত্বক।
৭. জ্বালা বা চুলকানি কমাতে এই ঘরোয়া উপায়ে তৈরি মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরার নির্যাস ও হলুদ ভাল করে মিশিয়ে এই মাস্কটি তৈরি করুন। ত্বকের যে অংশে সমস্যা রয়েছে, সেখানে আলতো হাতে এই মিশ্রণটি ভালভাবে লাগিয়ে নিন। কুড়ি মিনিট রেখে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ভালো করে মুখে ধুয়ে নিন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে দু’বার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে অ্যালোভেরা ও হলুদের জুড়ি মেলা ভার, এই মিশ্রণটি লাগালে মুখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন লাল দাগ হয়ে যাওয়া, ব্রণর কারণে দাগ ছোপ ও জ্বালার হাত থেকে রেহাই পাবেন।
কোভিড কালে আপনার বিউটি রেজিম কী? আপনার ঝুলিতেও কি আছে রূপচর্চার এমন কিছু ঘরোয়া উপায়? থাকলে জানাতে ভুলবেন না আমাদের।