নয়াদিল্লি: ভীমা কোরাগাঁও হিংসা (Bhima Koregaon Violence) মামলায় বারবার প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে মানবাধিকার নিয়ে। রাষ্ট্রের চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করা সমাজকর্মী, প্রতিবাদীদের শহুরে নকশালের তকমা দিয়ে জেলে পুরে রাখার অপর নাম যেন এই মামলা। মিথ্যা মামলায় বিনা বিচারে বুদ্ধিজীবীদের জেলে ফেলে রাখার উদাহরণই যেন ভীমা কোরেগাঁও হিংসা মামলা। তিন বছর চলছে মামলা, এখনও দোষী সাব্যস্ত করা গেল না কোনও অভিযুক্তকে। অথচ তত্ত্বের পর তত্ত্ব তুলে ধরে জেলে ফেলে রাখা হচ্ছে অভিযুক্তদের।
ভীমা কোরেগাঁও হিংসার মামলা নিয়ে বারবার প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র। দু-হাজার আঠারোর পয়লা জানুয়ারি ভীমা কোরেগাঁওয়ে দলিতদের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, মাওবাদীদের মদতে হিংসার পরিকল্পনা করেন সমাজকর্মীরা। নির্বিচারে গ্রেফতার করা হয় সমাজের বিভিন্নস্তরের বিশিষ্টজনদের। ভারভারা রাও থেকে শুরু করে সুধা ভরদ্বাজ, ফাদার স্ট্যান স্বামী-সহ বহু বিশিষ্টজনকে গ্রেফতার করা হয় সেসময়। গ্রেফতার ১৬ জনকে আরবান নকশালের তকমা দেওয়া হয়। মামলা চলাকালীন গত জুন মাসে কার্যত বিনা চিকিৎসায় জেলে মারা যান ফাদার স্ট্যান স্বামী। বারবার অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন আদালতে খারিজ হলেও, তিন বছরে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি। প্রতিবাদীদের কণ্ঠরোধে কার্যত তাঁদের জেলে ফেলে রাখা হয়। মানবাধিকারের বিষয়টিও অগ্রাহ্য করার অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি এই মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন আইজীবী ও সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ। তাঁর জামিন বম্বে হাইকোর্ট মঞ্জুর করলেও, তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল এনআই। যদিও সুপ্রিম কোর্ট ওই আবেদন খারিজ করে দেয়। সব মিলিয়ে সমাজের প্রতিবাদীদের কণ্ঠস্বর রোধেই যেন শহুরে নকশালের তকমা লাগিয়ে জেলবন্দি করার কৌশল নেয় কেন্দ্র। একসময় বম্বে হাইকোর্টেও প্রশ্ন তোলে, বিনা বিচারে অভিযুক্তদের জেলে পচতে দেওয়া যায় কিনা? কিন্তু নিশ্চুপ কেন্দ্র। ফলে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে এই ভীমা কোরেগাঁও হিংসা মামলা মিথ্যা মামলায় বিনা বিচারে বুদ্ধিজীবী, সমাজকর্মীদের আটকে রাখার উদাহরণ হিসেবে অনেকেই এই মামলার নাম তুলে ধরেন।
মমলার তিন বছর হয়ে গেলেও, প্রমাণিত হল না কোনও অভিযোগ, কেবল তত্ত্বের পর তত্ত্ব সাজিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে মামলাটিকে। ফলে বারবার প্রশ্ন উঠছে কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়ে।