নয়াদিল্লি: ১৯৪৭ সালের কাশ্মীর (Kashmir) সম্পর্কিত নথিপত্র প্রকাশ করা আটকাতে পারে ভারত সরকার (Government of India)। কারণ এরমধ্যে এমন কিছু চিঠিপত্র রয়েছে যা বৈদেশিক সম্পর্কে অবনতি ঘটাতে পারে। এই দাবি করল নামী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। ওই গোপনীয় চিঠিপত্রগুলির পোশাকি নাম বুচার পেপার্স (Butcher Papers)। মনে করা হয়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু (Jawaharlal Nehru) কেন পাকিস্তানের (Pakistan) সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করেন এবং কেন জম্মু ও কাশ্মীরকে (Jammu-Kashmir) বিশেষ ‘স্টেটাস’ দেওয়া হয়েছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা রয়েছে ওই বুচার পেপারে। প্রসঙ্গত, এই চিঠিপত্র সমেত নথির বেশিরভাগটাই রয়েছে লন্ডনের (London) ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ আর্মিতে।
বহু দশক ধরে জম্মু-কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান, নিজস্ব পতাকা এবং স্বায়ত্তশাসনের ক্ষমতা ছিল। একমাত্র প্রতিরক্ষা এবং বিদেশনীতির ক্ষেত্রে ভারত সরকারের আওতায় পড়তে হত। কিন্তু ২০১৯ সালে কাশ্মীরের সেই বিশেষ মর্যাদা সরিয়ে নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। এই সিদ্ধান্তের ফলে কাশ্মীর উপত্যকায় শাসন দৃঢ় করতে চেয়েছে কেন্দ্র, কিন্তু ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পর সেখানে নাশকতার ঘটনা বেড়েই চলেছে।
বুচার পেপার আসলে কী?
আরও পড়ুন: WB State Budget 2023 : রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা হল বাজেটে পেশের সময়
১৯৪৮-৪৯ সালে নেহরু সহ সরকারি শীর্ষপদস্থদের সঙ্গে ভারতীয় সেনার তৎকালীন সেকেন্ড কম্যান্ড ইন চিফ স্যর ফ্রান্সিস রবার্ট রয় বুচারের (Sir Francis Robert Roy Butcher) মধ্যে যেসব আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, তাই লিপিবদ্ধ রয়েছে বুচার পেপারে। বহু বছর ধরে চেষ্টা চলেছে সেই নথিপত্র খোলসা করার। জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত, তা বুঝতেই ওই নথি পড়তে চেয়েছেন অনেকেই।
গার্ডিয়ানের (The Guardian) হাতে এসেছে কিছু বৈদেশিক বিষয়ক নথিপত্র। গার্ডিয়ান বলছে, ওই নথিপত্র উন্মোচন করা উচিত নয়। কারণ তাতে কাশ্মীরে মিলিটারি কার্যকলাপ এবং কাশ্মীরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে স্পর্শকাতর বিষয়বস্তু রয়েছে। যে কাগজ গার্ডিয়ানের হাতে এসেছে তা রক্ষিত আছে নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম এবং লাইব্রেরিতে। এটি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অন্তর্ভুক্ত হলেও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা।
ওয়াকিবহাল সূত্রের মতে, কাশ্মীরের সামরিক উন্নয়ন সম্পর্কে অবগত ছিলেন নেহরু এবং এও জানতেন, উত্তেজনা বাড়াতে বহিরাগত সামরিক শক্তির ব্যবহার করতে চাইছে পাকিস্তান। কূটনৈতিক পদ্ধতিতে বিষয়টির সমাধান করতে নেহরুকে পরামর্শ দিয়েছিলেন রয় বুচার। কারণ সে সময় ভারতের সামরিক বাহিনী ক্রমে ক্লান্ত হয়ে পড়ছিল। এমনকী বিষয়টি রাষ্ট্রসঙ্ঘের দরবারে উত্থাপন করার পরামর্শ দেন বুচার।