আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীতে ভারতীয় অনুপ্রবেশ ? এমনটাই দাবি মার্কিন প্রশাসনের। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, আইএস জঙ্গিদের মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৬৬ জন সদস্য আছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সন্ত্রাস দমন এবং জঙ্গি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ‘২০২০ কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেররিজম’ শীর্ষক ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৬৬ জন আইএস জঙ্গির হদিস মিলেছে,যারা ভারতীয় বংশোদ্ভূত বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ২০২০ সালে এদের মধ্যে কাউকেই ভারতে প্রত্যার্পণ করা হয়নি বলেও মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সেখানে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA) সহ ভারতের অন্যান্য সন্ত্রাস দমন সংস্থাগুলির কার্যকলাপের প্রশংসা করা হয়েছে। মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ভারতের প্রশংসা করে জানান, জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবমতো (UN Security Council Resolution 2309) ভারত একযোগে কাজ করে চলেছে আমেরিকার সঙ্গে। বিমানে যাতায়াতের সময় যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ভারতের বিমানবন্দরগুলিতে পণ্য নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ‘ডুয়াল স্ক্রিন এক্সরে’ মেশিন ব্যবহারেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : Jammu & Kashmir: জঙ্গি হামলার পর জম্মু-কাশ্মীর পুলিসে বড়সড় রদবদল
মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের ওই রিপোর্টে সন্ত্রাস দমন ও মোকাবিলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। রিপোর্টের নির্যাস, সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের ভূমিকা খুবই হতাশাজনক। আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর কথা মনে করিয়ে দিয়ে ব্লিঙ্কেন জানান, তাদের গোষ্ঠীকে হালকা ভাবে নেওয়া ঠিক হবে না। ইরাক ও সিরিয়ায় তাদের শক্তিক্ষয় হলেও এখনও তারা বিশ্বের শক্তিশালী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে অন্যতম।
আরও পড়ুন : সংসদে জঙ্গি হামলার ২০ বছর, শ্রদ্ধা রামনাথ, মোদি, সোনিয়া, মমতার
ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার উল্লেখ করে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের ওই রিপোর্টে বলছে, আইএস-এর প্রত্যক্ষ মদতে বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে ভারতে। দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মতে, জম্মু-কাশ্মীর, পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যকে ট্রানজিট রুট হিসাবে ব্যবহার করছে আইএস। সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গি হানার ঘটনা ঘটেছে। তাতে অনেক সাধারণ নাগরিকেরও মৃত্যু হয়। গত সোমবারই জম্মু-কাশ্মীর সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর বাসে শ্রীনগরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাতে ৩ পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। জম্মু-কাশ্মীরের ওই সব জঙ্গি হামলার পিছনে আইএস-এর হাত আছে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। এ ব্যাপারে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা নিজেদের সোর্স মারফত খোঁজখবর নিচ্ছে। গত মার্চ মাসে প্রকাশিত রাষ্ট্রপুঞ্জের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইসলামিক স্টেট খোরাসন গোষ্ঠী (ISK) ভারতে জেহাদির বিষ ছড়াচ্ছে। আফগানিস্তানেও এই গোষ্ঠীর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। কাবুলে তালিবানরা ক্ষমতায় আসার পর বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনার পিছনে আইএস-এর হাত রয়েছে বলে সূত্রের খবর।