কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: পঞ্জাবের লুধিয়ানায় বিস্ফোরণের দিনই গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রে এমনই খবর। শুধু তাই নয়। গোয়েন্দা দফতর সব মিলিয়ে তিন তিন বার সতর্ক করে রাজ্য প্রশাসনকে। প্রথম সতর্কবার্তা এসেছিল ৯ জুলাই, দ্বিতীয়টি আসে ৭ ডিসেম্বর, শেষেরটি ২৩ ডিসেম্বর বিস্ফোরণের দিন। প্রশ্ন উঠেছে তিন তিনটি সতর্কবার্তা পেয়েও পুলিস ও প্রশাসন কেন সতর্ক হয়নি? কেনই বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়নি।
রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের এক কর্তা জানান, পাক মদতপুষ্ট আইএসআই এবং খলিস্তানি জঙ্গিরা রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে বলে তাঁদের কাছে খবর ছিল। এই নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতেই গোয়েন্দা দফতর রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করে। তারপরেও কেন প্রশাসন তা মোকাবিলায় কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন, জানতে চাওয়া হলে ওই গোয়েন্দা কর্তা মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
লুধিয়ানা বিস্ফোরণের ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিস ও ফরেনসিক দফতর তদন্ত শুরু করেছে। এক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ জানান, বিস্ফোরণে খুব উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আইইডি ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। তদন্ত এখনও চলছে। শেষ না হলে বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না।
গত ২৩ ডিসেম্বর ১২টা ২২ মিনিটে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে লুধিয়ানার আদালত৷ সেই সময় আদালতের পঞ্চম তলার একটি এজলাসের ভিতর সিমরজিৎ বেইন নামে এক বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার শুনানি চলছিল৷ তাঁর হয়ে আদালতে সওয়াল করছিলেন অকালি নেতা তথা আইনজীবী হরিশ রাই ধান্দা৷ বিস্ফোরণে শব্দে মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আদালত চত্বরে৷
প্রতক্ষ্যদর্শী এক আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনতলার একটি শৌচালয়ের ভিতর থেকে বিকট শব্দ শোনা যায়৷ তাতে মারা গিয়েছেন ২ জন৷ আহত হন আরও ৪ জন৷ যদিও আহতরা সকলে বিপদমুক্ত আছেন৷তবে বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল, পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়ে আদালতের সিলিং৷
আরও পড়ুন- Venkaiah Naidu: কোথায় গলদ? সাংসদদের আত্মসমীক্ষা করতে বললেন বেঙ্কাইয়া নাইডু
এরই মধ্যে শিরোমণি অকালি দলের বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী বিক্রম সিং মাজিথিয়ার বিরুদ্ধেও পঞ্জাব পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ড্রাগ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি জানান, খুব শীঘ্রই ওই ড্রাগ মাফিয়াকে গ্রেফতার করা হবে। বিক্রম সিংয়ের সঙ্গে লুধিয়ানা বিস্ফোরণের কোনও যোগাযোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও।
পঞ্জাবের উপমুখ্যমন্ত্রী সুখজিন্দর সিং রণধাওয়া বলেন, ‘শিরোমণি অকালি দলের নেতা বিধায়কদের মাদক-কাণ্ডে জড়িয়ে যাওয়া অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যত দিন প্রকাশ সিং বাদল নেতৃত্বে ছিলেন, ততদিন দলের প্রতি তাঁর একটা কম্যান্ড ছিল এখন আর নেতাদের দলের প্রতি সেই কম্যান্ড নেই। আমি এখনও প্রকাশ সিং বাদলকে শ্রদ্ধা করি।’ তাঁর দাবি, পঞ্জাব সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আইন আইনের মতো চলবে।