কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই মোদীর সরকারে (Modi Government) দ্বিতীয় মেয়াদের পূর্ণাঙ্গ বাজটকে (Union Budget 2023) ঘিরে আশা-প্রত্যাশা ছিল দেশবাসীর। তবে বাজেট ঘোষণার পর বিরোধী থেকে অর্থনীতিবিদদের একাংশের মত দেশের ১০ শতাংশের মুখে হাসি ফোটাতে পারলেও দেশের ৫০ শতাংশ রয়ে গেল সেই তিমিরেই। বিশেষ করে দেশের বেকার সমস্যা ও কর্মসংস্থান যোগানের ক্ষেত্রেও আশার কোনও বাণী শোনাতে পারলেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Finance Minister Nirmala Sitharaman)। আরও করুন অবস্থা সংখ্যালঘু উন্নয়ন খাতে। ২০২২-২০২৩ অর্থবর্ষের নিরিখে একেবারে এক ধাক্কায় তলানিতে নেমে এল বরাদ্দ ও অনুদানের পরিমাণ।
প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ থেকে শুরু করে মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ, ফ্রি কোচিং, মাদ্রাসা শিক্ষা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রতিটি প্রকল্পেই দেদার ছাঁটাই হয়েছে বরাদ্দ অর্থ।
এক নজরে দেখে নিন কতটা কমল বরাদ্দের পরিমাণ (allocated funds)
১. মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ, সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের জন্য বিভিন্ন পেশাগত (professional course) ও প্রযুক্তিগত (technical) যে সব কোর্সে পড়াশোনার জন্য বরাদ্দ প্রায় ৮৭% কমিয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবর্ষ করা হয়েছে মাত্র ৪৪ কোটি। যেখানে ২০২২-২০২৩ অর্থবর্ষ এই মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপের জন্য বিশেষ ভাবে নির্দিষ্ট করা হয় ৩৬৫ কোটি টাকার অর্থ।
২. বিপুল পরিমাণে কমানো হয়েছে মাদ্রাসা ও সংখ্যালঘু শিক্ষা (madrasa and minority education) খাতে বরাদ্দ। ২০২২-২০২৩ অর্থবর্ষের বরাদ্দ ১৬০ কোটি থেকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবর্ষে প্রায় ৯৩ শতাংশ ছাঁটাইয়ের পর এই খাতে বরাদ্দ নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০ কোটিতে।
৩. এমনকী কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের (Ministry of Minority Affairs) আওতায় থাকা প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপের (pre-matric scholarships ) ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে বরাদ্দের পরিমাণ। ২০২২-২০২৩ অর্থবর্ষে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ১,৪০৫কোটি। সেখান থেকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবর্ষে এই অর্থ থেকে প্রায় ৯৯২ কোটি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
৪. তবে পোস্ট ম্যাট্রিক (post-matric scholarships) খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ১০৬শতাংশে হারে। গত অর্থবর্ষ ২০২২-২০২৩ এ যেটা ছিল ৫৫০ কোটি সেটা ২০২৩-২০২৪ অর্থ বর্ষে বাড়িয়ে ১০৬৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।
৫. তবে মৌলানা আজাদ ন্যাশনাল ফেলোশিপ (Maulana Azad National Fellowship) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের এই ফেলোশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে যে কোনও সংখ্যালঘু পড়ুয়া (মুসলিম, শিখ, পারসি, বৌদ্ধ ও ক্রিশ্চান) উচ্চ শিক্ষার ও ফুল টাইম এমফিল (MPhill) কিংবা পিএইচডি (PhD) স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এই বিশেষ আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হত। এর পাশাপাশি প্রি ম্যাট্রিকুলেশন স্কলারশিপের সুবিধে এবার থেকে শুধুমাত্র নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা পাবে।
গত বছরের তুলনায় এই অর্থবর্ষ এই বিপুল পরিমাণে বরাদ্দ ছাঁটাইয়ের ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (minority community) পড়ুয়ারা থেকে শুরু করে শিক্ষক সকলের মধ্যে নরেন্দ্র মোদির এই বাজেটকে ঘিরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।