নয়াদিল্লি: তিনি আশ্বাস দিলেন৷ বুঝিয়ে দিলেন পাশে আছেন৷ গোটা বিশ্ব যখন করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্কে শিহরিত তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতির উদ্দেশে ভাষণে দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিলেন৷ শান্ত থাকতে বললেন৷ একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, বছর দু’য়েক আগে করোনা নামক আতঙ্ককে যখন মানুষ চিনতেন না তখন যেভাবে সাহসের সঙ্গে গোটা দেশ করোনার মোকাবিলা করেছিল সেই সময়ের কথাও৷ প্রধানমন্ত্রীর কথায়,‘পরিস্থিতি জটিল, কিন্তু নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়৷ আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই৷ কেন্দ্রীয় সরকার সব রকম পদক্ষেপ করছে৷’
প্রধানমন্ত্রীর আরও ঘোষণা, আগামী বছর প্রথম সোমবার থেকেই শুরু হচ্ছে ১৮ বছরের নীচে করোনার টিকা৷ ঠিক তার পরের সোমবার থেকেই শুরু হচ্ছে প্রথম দফার করোনার বুস্টার ডোজ৷ আর একই সঙ্গে এদিন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, খুব তাড়াতাড়ি বাজারে আসতে চলেছে করোনার নজ়ল ডোজ এবং বিশ্বের মধ্যে প্রথম ডিএনএ ভ্যাকসিন৷ এখনও পর্যন্ত ডিএনএ ভ্যাকসিন আরও কোনও দেশ চালু করতে পারেনি বলেও প্রধানমন্ত্রীর দাবি৷
করোনার টিকাকরণ শুরুর পর থেকেই তার কার্যকারিতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে৷ কোনও সংস্থা দাবি করেছে, দু’টি ডোজই যথেষ্ট৷ কোনও সংস্থার দাবি ছিল, দু’টি ডোজের পর আরেকটি বুস্টার ডোজ দিতে হবে৷ কোনও সময় সামনে এসেছে, ভিন্ন ভিন্ন সংস্থার ভিন্ন ভিন্ন টিকা দেওয়ার কথা৷ মোদ্দা কথা, করোনার টিকাপ্রদান নিয়ে সময় যত এগিয়েছে মত-বিরুদ্ধ মত, যুক্তি একাধিক সামনে এসেছে৷ একই সঙ্গে সামনে এসেছে নজ়ল ভ্যাকসিনের কথাও৷ যে প্রক্রিয়ায় লালারসের সঙ্গে সরাসরি ভ্যাকসিনের যোগ সম্ভব৷ ঠিক যেভাবে নাকের সমস্যা হলে চিকিৎসকেরা নজ়ল ড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ ঠিক একইরকম ভাবে কোনও রকম টিকার ব্যবহার ছাড়া নজ়ল ভ্যাকসিনের মাধ্যমে করোনার প্রতিষেধক প্রয়োগে চিন্তাভাবনা সামনে আসতে শুরু করেছিল৷
আরও পড়ুন: PM Modi: ১০ জানুয়ারি থেকে ষাটোর্ধ্বদের কোভিড বুস্টার, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
প্রসঙ্গত, আর দশটি ভাইরাস ঘটিত রোগের থেকে করোনার প্রভাব বা গতিপ্রকৃতি সম্পূর্ণ আলাদা৷ আর তাই জন্যই করোনা পরীক্ষার জন্য মানবদেহের লালারসকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল৷ চিকিৎসকদের একটি পক্ষ সেই গবেষণার সূত্র ধরেই দাবি করেছিলেন, লালারসের সঙ্গে সরাসরি ভ্যাকসিনের সংযোগ ঘটাতে পারলে করোনার প্রতিষেধক হিসেবে গুরুত্ব বাড়বে৷ সেই চিন্তাধারাকে সামনে রেখে করোনার নজ়ল প্রতিষেধক তৈরির পথে এগোয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক৷
এদিন প্রধানমন্ত্রী সেই পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপের কথাই জানিয়েছেন৷ একইসঙ্গে ডিএনএ-তে প্রতিষেধক প্রক্রিয়ার প্রয়োগ যে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে সেকথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস, বিশ্বের মধ্যে প্রথম এই পদ্ধতিতে করোনা মোকাবিলার দিগন্ত খুলতে চলেছে ভারত৷