নয়াদিল্লি: প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর কাছ থেকে ২ কোটি টাকায় এমএফ হুসেনের ছবি কিনেছিলেন ইয়েস ব্যাঙ্ক কর্তা রানা কাপুর৷ স্পেশ্যাল কোর্টে জমা দেওয়া চার্জশিটে এমনটাই উল্লেখ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট৷ চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, ছবিটি কিনতে রানা কাপুরকে বাধ্য করা হয়েছিল৷ ইউপিএ আমলের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী মুরলী দেওরার কথায় ছবিটি কিনেছিলেন ইয়েস ব্যাঙ্ক কর্তা৷ মিলিন্দ দেওরা বলেছিলেন, এমএফ হুসেনের ছবি না কিনলে তাঁকে চড়া মাশুল দিতে হবে৷ সোনিয়া এবং গান্ধী পরিবারের কাছাকাছি আসার সুযোগ হারাবেন৷ এবং পদ্মভূষণ সম্মান হাতছাড়া হবে৷
আর্থিক তছরুপ মামলায় জেলে রয়েছেন ইয়েস ব্যাঙ্ক কর্তা৷ তিনি, তাঁর পরিবার, দেওয়ান হাউসিং ফাইনান্স লিমিটেডের প্রোমোটার কপিল এবং ধীরজ ওয়াধওয়ানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি স্পেশ্যাল কোর্টে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা করে ইডি৷ দেওয়ান হাউসিং, দুই প্রোমোটার এবং রানা কাপুরের মধ্যে ৫০৫০ কোটি টাকা বেআইনিভাবে লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ৷ ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে ওই আর্থিক তছরূপ মামলার তদন্ত হাতে নেয় ইডি৷ এর কয়েকদিন বাদেই গ্রেফতার হন রানা কাপুর৷ জিজ্ঞাসাবাদে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে রানা কাপুর জানিয়েছেন, মন্ত্রীর কথামতো তিনি এমএফ হুসেনের ছবিটি প্রিয়াঙ্কার কাছ থেকে ২ কোটি টাকায় কিনে নেন৷ পরে মুরলীর ছেলে মিলিন্দের কাছ থেকে জানতে পারেন, ওই টাকা নিউ ইয়র্কে সোনিয়ার চিকিৎসায় খরচ করেছে গান্ধী পরিবার৷ ইডির কাছে জেরায় প্রয়াত আহমেদ পটেলের কথাও বলেছেন রানা কাপুর৷ গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ আহমেদ পটেল তাঁকে বুঝিয়েছিলেন, সোনিয়ার চিকিৎসার খরচ বহন করে তিনি গান্ধী পরিবারের উপকার করেছেন৷ পদ্মভূষণের জন্য তাঁর নাম বিবেচনা অবশ্যই করা হবে৷
যদিও ছবিটি কেনার জন্য তিনি মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না বলে চার্জশিটে উল্লেখ আছে৷ ইডিকে রানা কাপুর জানিয়েছেন, কংগ্রেস সাংসদ মিলিন্দ দেওরা বহুবার তাঁকে ফোন ও মেসেজ করেন৷ একাধিকবার বাড়ি এবং অফিসে গিয়েও দেখা করেন৷ কিন্তু এই ‘ডিলে’ তাঁর মত ছিল না৷ চেষ্টাও করেছিলেন মিলিন্দ দেওরাকে এড়িয়ে যাওয়ার৷ ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন মুরলী দেওরা দিল্লির লোধি এস্টেটের বাংলোয় তাঁকে ডেকে পাঠান৷ দু’জনে রাতে নিরামিশ ভোজন করেন৷ ডিনারের পর কেন্দ্রীয়মন্ত্রী তাঁকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন৷ জানান, ছবি কিনতে আর দেরি হলে তার খারাপ প্রভাব ইয়েস ব্যাঙ্কের উপর পড়বে৷ দেওরা পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে৷ তাই শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস নেতাদের চাপে একপ্রকার বাধ্য হয়েই ছবিটি কেনেন রানা কাপুর৷
আরও পড়ুন: COVID-19 India: দেশে একদিনে সঙ্ক্রমণ ছাড়িয়েছে আড়াই হাজারের গণ্ডি, চিন্তায় মৃত্যুর সংখ্যা