Saturday, June 14, 2025
HomeScrollEngvsInd: সামি - বুমরাহরা পারছেন, কোহলি আপনার কী হল!

EngvsInd: সামি – বুমরাহরা পারছেন, কোহলি আপনার কী হল!

Follow Us :

বুমরাহ আর সামি যখন ক্রিজে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছেন ব্যাট হাতে, তখন টিভি ক্যামেরার দৌলতে দেখলাম নেতা কোহলির জোশ। আবার যখন বোলাররা ইংল্যান্ডের একের পর এক উইকেট তুলে নিচ্ছেন, নেতা মাঠে ক্যামেরাবন্দী হওয়ার জন্য জোশ দেখাচ্ছেন। কোহলির থেকে দলের ‘হোশ’টা বেশি দরকার। প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে যখন সহজ ক্যাচ ছাড়লেন, তখনও হোশ – ফোঁস সব গেছে। তাঁর ক্যাচ ফেলা টিভিতে সবচেয়ে বেশিবার দেখানো হয়েছে। তারপরও স্লিপে ক্যাচ ধরেছেন। ফিল্ডিং করতে নামার আগে প্রতিপক্ষ দলের ভার্বাল ডুয়াল সম্পর্কে আম্পায়ারদের চাপে রেখে দিলেন। সব ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে নানান সময় মানসিক লড়াইয়ে বোঝালেন তাঁর জোশ অন্য স্তরের। কিন্তু সামনে থেকে লড়াই – ইংল্যান্ডের নেতা রুট যা করে দেখলেন, তা ব্যাটসম্যান কোহলির থেকে গত দুবছর মিলছে কই! তবুও বিদেশের মাটিতে ভারত জিতছে।

দ্বিতীয় টেস্টের শেষদিনটি ভারতেই নামে লেখা ছিল। শুরু করেছিল ব্যাকফুটে থেকে। তারপর, বোলাররা সব করলেন। দলকে জেতালেন। দিনের শুরুতে নবম উইকেটে ৮৯ রান যোগ করলেন সামি – বুমরাহ। তারপর রুটদের সামনে জয়ের জন্য ২৭২ রানের লক্ষ্য সাজিয়ে দিয়ে , বল হাতে লড়ে দেখলেন ওঁরা। ক্যাচ ফেললেন দলের তারকা ব্যাটসম্যানরা (রোহিত আর কোহলি)। তারপরও দল জিতল। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল। আর বাকি ৩টি টেস্ট।

বোর্ড সভাপতি হয়ে পুরো পাঁচদিনই লর্ডসে ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দেখলেন তাঁর দেশের দল জিতল। তিনি দলনেতা হয়ে এই স্বপ্নই দেখতেন। বিদেশের মাটিতে টেস্ট জিততে হবে। সিরিজ জিততে হবে। খেলোয়াড় হয়ে করেছিলেন। প্রশাসক হয়েও সেই লর্ডসই দিল সেই সফল। তিনি টুইট করলেন।

এরপর ম্যাজিক মোমেন্টস বলে এই টেস্টের শেষদিনের খেলা দেখনো যেতেই পারে। শুরুতে কোনঠাসা ভারত দিনের শেষে ১৫১ রানে ম্যাচ জিতে নিল।

মহম্মদ সামি (অপরাজিত ৫৬, ১০ ওভারে ১৩ রানে ১ উইকেট) আর জসপ্রীত বুমরাহ ( অপরাজিত ৩৪, ১৫ ওভারে ৩৩ রানে ৩ উইকেট) মনে হয় জীবনের সেরা টেস্টটি খেললেন। সঙ্গে সবে শুরু করা পেসার সিরাজ (৩২ রানে ৪ উইকেট) নিজেকে নিংড়ে দিলেন। বাউন্সার মেরে, ব্রিটিশ ব্যাটসম্যানদের চোখে চোখ রাখলেন, একবারও চোখের পাতা না ফেলে! পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখলাম, লর্ডসে এটা ভারতের তৃতীয় টেস্ট জয়। এর আগে কপিলের দল জিতেছিল ১৯৮৬ তে। তারপর ধোনির নেতৃত্বে ২০১৪ সালে। আর এবার ২০২১ সালে কোহলির দলের। আর এই জয়ে দ্বিতীয় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড় ১৪ পয়েন্ট পেয়ে এগিয়ে গেল।

অভাবনীয় এক লড়াইয়ের স্বাক্ষী সকলে। শুরুতে সামি – বুমরাহ ব্যাট হাতে। নবম উইকেটে ৮৯ রান! শেষ কবে ভারতীয় বোলাররা ব্যাট হাতে তুলেছেন, মনেই পড়ছে না। আর তাতেই দলের রান ৮ উইকেটে ২৯৮ রানে পৌঁছে যায়। ইনিংস থামিয়ে ২৭২ রানে ম্যাচ জিতে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার মধ্যে ছিল, নিশ্চয়তা। ভারত এই ম্যাচে হারছে না। বিসিসিআই টিভি’র দৌলতে দেখলাম, এই দুই লড়াকু ক্রিকেটার কিভাবে লর্ডসের ড্রেসিরুমে ফিরলেন। সব সতীর্থরা হাততালি আর উষ্ণ আলিঙ্গনে মনে আর বুকে বসলেন।

ম্যাচের শেষে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাটকে বলতে শুনলাম,’গোটা দল ভীষণ গর্বিত। এই ম্যাচটির জন্য পরিকল্পনা সাজিয়ে নেমেছিলাম। এবং সেইমত চেষ্টা করি গেছি সকলে। প্রথম তিন দিনে পিচ কিছুই সাহায্য করেনি। প্রথমদিনটাই ছিল সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের। দ্বিতীয় ইনিংসে যে ভাবে আমরা চাপের মুখে লড়েছি, তা প্রশংসনীয়। সামি-বুমরাহ তো আউটস্ট্যান্ডিং!
আমাদের বিশ্বাস ছিল, ওদের ৬০ ওভারের মধ্যে আউট করে দেব। আমরা যখন দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করছিলাম, মাঠের মধ্যে তাপ – উত্তাপ বেড়েছিল। সেটা আমাদের সাহায্যই করেছে। ওদের আত্মসমর্পণ করতে দেখে সকলে আজ গর্বিত। এটাই ওদের বোঝাতে চেয়েছিলাম। সামি-বুমরাহ বুঝিয়ে দিয়েছে। ব্যাটিং কোচ সকলের জন্য প্রচুর খাটছেন। দলের জন্য কিছু করার জন্য ওরা ছটফট করে। আমরা সকলেই আজ জানি ওই দুজনের করা ৮৯ রান কতোটা মহামূল্যবান।’

সোমবার ভারতীয় সময় রাত ১১ টার পর দলের জয় দেখেই অনেকে টিভি বন্ধ করেছিলেন। তাই ম্যাচের শেষে ভারতীয় অধিনায়ক কী বলেছেন, তা শোনেননি। তাই কোহলির কথার অনেকটাই এখানে লিখেই রাখলাম। এতো কিছু বললেন তিনি, একটু যদি বলতেন – ক্যাচ ফেলে তাঁরা বোলারদের কাজটা কতো কঠিন করে দিয়েছিলেন। বলেননি। নিজের ব্যাট হতে ব্যার্থতার কথা বলেননি।

কিন্তু পরিকল্পনায় ছিল, বিপক্ষ দলের অধিনায়কের উইকেটটি যেনতেন প্রকারে তুলে নেওয়ার। ক্রিজে ‘রুট’ শিকড় গেড়ে বসতে না দেওয়ার। যা তিনি আগের ইনিংসে করেছিলেন। বুমরাহ যখন রুটকে (৩৩ রান) ফেরালেন, তখনই দলের জোশ দ্বিগুণ হয়ে ওঠে। ঠিক চা-পান বিরতির পরই ইংল্যান্ড চেপে পড়ে ৬৭ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে।

জোস বাটলারের ক্যাচটি যদি প্রথম স্লিপে বিরাট কোহলি সহজ করে ধরতে পারতেন, তখনই ইংল্যান্ডের ষষ্ঠ উইকেটটা চলে যেত। রবীন্দ্র জাদেজা নো-বলটি করলে মঈন আলিও ফিরে যেতেন পন্থ ক্যাচটি ধরেছিলেন। সিরাজ ধাক্কাটা মারলেন। মঈন (১৩) আর সাম কুরান (০) কে ফেরানোর পর শেষ উইকেটটি অ্যান্ডারসনের নিতেই জয়ের উল্লাসে মাতলেন।

দিনের শুরুতে ঋষভ পন্থ ছিল ভরসার স্তম্ভ। কিন্তু পন্থ ব্যাট করেন, এখনও তিনি পরিপূর্ণ হয়ে ওঠেননি। চালিয়ে দিয়ে ব্যাটিং করাটা শিল্প নয়, পরিস্থিতি বুঝে ব্যাট করাটা খুব জরুরি। কবে পন্থ একটা ম্যাচ খেলবেন, তারজন্য ম্যাচের পর ম্যাচ সুযোগ দেওয়া চলবে। বিশ্বের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা বসে বসে বয়স বাড়াচ্ছেন। তিনি যে ব্যাটিংটা অনেকের চেয়ে ভালো করেন, তা আইপিলের দলগুলোও জানে। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট কবে জানবে? সুযোগ সকলের সমানভাবে পাওয়া উচিত।

দলের টপ অর্ডার অভিজ্ঞতার বিচারে অনেক শক্তিশালী। রাহুল সুযোগ পেয়েই ম্যাচের সেরা হলেন। আর পূজারা এই দলের সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেটের ব্যাটসম্যান। ময়াঙ্ক অপেক্ষা করছেন। রাহানে এই ৬১ রান করে আরও কিছু টেস্ট খেলে যাবেন। ওয়াশিংটন সুন্দররা বসেই থাকবেন। আর নেতা কোহলি ?

এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে ট্রেন্ডিং হয়ে গেছে ‘ওভার রেটেড ব্যাটসম্যান’। শেষ দুটি বছরে টেস্টে সেঞ্চুরি নেই। এই দলে কোচ যদি গ্রেগ চ্যাপেল হতেন, তাহলে কোহলিকে হয়তো শুনে ফেলতে হত – কিসের পারফরমেন্সে তুমি দলে থাকবে? নেতা সৌরভ শুনেছেন এমন কথা। কোহলি শাস্ত্রীকে এই কোচের ‘চাকরি’টি দেননি। আর ভারতীয় কোচ বলে এই প্রশ্ন কোহলিকে শুনতে হচ্ছে না। সৌরভ দেখছেন নিশ্চই সব। পেশাদার দুনিয়ায় কোহলিও বোঝেন, ডিমান্ড মার্কেটে তিনি এখন কোথায় দাঁড়িয়ে।

রুটের সঙ্গে কথা বলুন কোহলি। নাহ্ হলে আগের একবারে মতো সচিনের সঙ্গেও কথা বলুন। নাহলে, শিয়রে সংক্রান্তি বাড়বেই। দলের টেল এন্ডররা ১০৬ রান এনে দিয়েছেন। না পারা কাজ , তারাও করছে। কোহলি আপনি তো বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। আপনিও পারবেন। কিন্তু কবে?
জানি, সামি – বুমরাহ বারবার এমন ব্যাটিং করতে পারবেন না। কিন্তু বোলিং তো করছে। কোহলির রান করার কথা। সেটা তো করুন।

লর্ডসের তিনটি টেস্ট জয়ের ঝলক।

পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা। বিদেশের মাটিতে ( দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া ) ভারতের হয়ে ৫ টি টেস্ট জিতে সকল অধিনায়কদের পিছনে ফেললেন। এমনকি এশিয়ার সেরা। পাকিস্তানের ওয়াসিম আক্রাম আর জাভেদ মিয়াঁদাদ ৪ টি করে জিতেছিলেন। আর ধোনি করেছিলেন ৩ টি টেস্ট জয়। কিন্তু কোহলি নেতা হয়ে বলতে পারবেন ওই জেতা ৫টি টেস্টে তিনি ক’টিতে ম্যাচের সেরা? সেটা না করতে পারলে, তিনি কোহলিই থাকবেন – সচিনকে টপকে যাওয়া স্বপ্নই রয়ে যাবে।

ছবি: সৌ – টুইটার

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Ahmedebad Aircraft Incident | দেরিতে পৌঁছনোয় প্রাণ রক্ষা যাত্রীদের, দেখুন বিগ ব্রেকিং
00:00
Video thumbnail
Narendra Modi | Benjamin Netanyahu | বিগ ব্রেকিং, মোদিকে ফোন নেতানিয়াহুর, কার পাশে দিল্লি?
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | ইজরায়েলের মি/সাই/ল হা/না আজারবাইজানে, প্রবল উ/ত্তেজ/না মধ্যপ্রাচ্যে, দেখুন বড় খবর
00:00
Video thumbnail
Donald Trump | Israel | ইজরায়েলকে সমর্থন আমেরিকার এবার কী হবে? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | ইরানের ব্যালেস্টিক মি/সা/ইল কনভয় হা/ম/লা ইজরায়েলের, বিপুল বি/স্ফো/রণ,দেখুন কী অবস্থা
00:00
Video thumbnail
Air India Incident | আমার চোখের সামনেই...কী হয়েছিল বিমানে? সব জানালেন একমাত্র জীবিত যাত্রী
00:00
Video thumbnail
Air India | Ahmedabad | মৃ/ত্যুকে হারিয়ে বাঁচলেন ১ যাত্রী কী বললেন? শুনুন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা
00:00
Video thumbnail
Beyond Politics | দু/র্ঘটনার কারণ কি কি? দু/র্নীতি, যন্ত্র না পাখি?
00:18
Video thumbnail
Beyond Politics | হাজার স্বপ্ন শেষ নিমেষেই, যাত্রা শেষ ঘুমের দেশেই
00:26
Video thumbnail
Colour Bar | কপিলের শোয়ের সাফল্য আমার জন্য
05:49