মহমেডান স্পোর্টিং—৩ কেরালা ব্লাস্টার্স–০
(শেখ ফৈয়াজ, আবিওলা দাউদা-২)
এবারের ডুরান্ড কাপে খুব জোরে দৌড়চ্ছে মহমেডানের অশ্বমেধের ঘোড়া। গ্রুপ লিগের চারটের মধ্যে তিনটে ম্যাচেই জিতেছিল তারা। তার পর শুক্রবার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনালে উড়িয়ে দিল আই এস এল-এর দল কেরালা ব্লাস্টার্সকে। প্রথমার্দ্ধে শেখ ফৈয়াজের গোলে এগিয়ে ছিল মহমেডান। বিরতির পর জোড়া গোল করে মহমেডানের বড় জয় নিশ্চিত করেন নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার আবিওলা দাউদা। আই এস এল-এর দল হলেও কেরালা ডুরান্ড খেলতে এসেছে তাদের রিজার্ভ টিম নিয়ে। তাদের প্রথম দলটি এখন আই এস এল-এর জন্য দুবাইতে প্র্যাক্টিস করছে। এমন একটা দলের বিরুদ্ধে পাঁচ বিদেশি সমৃদ্ধ মহমেডানের জেতাটা খুবই প্রত্যাশিত ছিল। মাঠেও তাদের সেই দাপট দেখা গেল। সেমিফাইনালে চেরনিশেভের দল খেলবে মুম্বই সিটি এফ সি এবং চেন্নাইয়ান এফ সি-র বিজয়ীর সঙ্গে।
আই লিগের দল হলেও মহমেডানের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। গত বছর তারা ডুরান্ডের রানার্স হয়েছিল। তার পর কলকাতা লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়। এবং আই লিগেও তারা রানার্স হয়েছিল। এবার মরসুমের অনেক আগে থেকেই তারা ভাল করে দল গড়ে প্র্যাক্টিসে নেমে গেছে। দলের বিদেশিরা বেশ ভাল। গত বছরের নায়ক মার্কাস জোসেফ তো আছেনই। তাঁর সঙ্গে বাকিরাও বেশ ভাল। এদিনই যেমন নাইজিরিয়ার আবিওলা দাউদা জোড়া গোল করলেন। ৩৪ বছর বয়সী এই বিদেশি এসেছেন কদিন আগেই। তাঁকে কোচ চেরনিশভ বিরতির পরে নামান নুরুদ্দিনের বদলে। এবং দাউদা নামার পর মহমেডানের আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ে। মহমেডানের দাপটে শুরু থেকেই কুঁকড়ে ছিল কেরালা। বিদেশিহীন কেরালা প্রথম থেকেই ব্যস্ত ছিল রক্ষণে। ১৭ মিনিটেই এগিয়ে যায় মহমেডান। বাঁ দিক থেকে মার্কাস জোশেফের ক্রসে হেড করে গোল করেন শেখ ফৈয়াজ। গোলের খোঁচা খেয়ে কেরালা আক্রমণে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু মহমেডান ডিফেন্স তাদের খুব একটা জায়গা দেয়নি। তবু যে ফাঁক ফোকড় দিয়ে তারা আক্রমণ করে তা রুখে দেন মহমেডান গোলকিপার মাইয়া।
বিরতির পর দাউদা নামায় মহমেডানের আক্রমণের গতি বাড়ে। অন্য ম্যাচের মতো মার্কাসই তাদের আক্রমণের সেরা ছিলেন। বিশেষ করে মার্কাস, ফৈয়াজ এবং দাউদার ত্রিফলা আক্রমণের সামনে দিশেহারা হয়ে যায় কেরালার ডিফেন্স। বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করার পর এই কম্বিনেশন থেকেই গোল আসে। মার্কাস জোসেফের বাড়ানো বল ফৈয়াজ সাজিয়ে দেন দাউদার জন্য। নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার গোল করতে ভুল করেননি। ম্যাচের বয়স তখন ৫৯ মিনিট। এই সময় লেফট ব্যাক অভিষেক আম্বেকরের ডাউন দ্য লাইন দৌড় এবং তার পর সেন্টার থেকে মহমেডান আক্রমণ আরও চাঙ্গা হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত ৮৪ মিনিটে সেই অভিষেকের সেন্টার থেকেই হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোলটা করলেন দাউদা। মহমেডান শেষ ডুরান্ড জিতেছিল ২০১৩ সালে। এবার তারা যা খেলছে তাতে সমর্ধকরা ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারেন।