মুম্বই সিটি এফ সি–১ মহমেডান স্পোর্টিং–০
(বিপিন সিং)
গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফ সি-র বিরুদ্ধে ৯১ মিনিট পর্যন্ত এক গোলে এগিয়ে থেকেও ম্যচ জিততে পারেনি মহমেডান। সেমিফাইনালেও তাদের একই দুর্দশা হল। আই এস এল-এর টিমের বিরুদ্ধে সমান তালে লড়াই করে ৯১ মিনিট পর্যন্ত গোল শূণ্য রেখেও তারা হেরে গেল মুহূর্তের অনবধনতায় গোল খেয়ে। ডুরান্ডে কলকাতার দলগুলির মধ্যে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছিল গত বারের রানার্স মহমেডানই। তাদের বিদায়ে এবারও ডুরান্ড অধরা রইল কলকাতার। রবিবার ফাইনালে মুম্বই সিটিকে খেলতে হবে বেঙ্গালুরু এফ সি ও হায়দরাবাদ এফ সি-র বিজয়ীর সঙ্গে।
আই এস এল-এর টিম হল মুম্বই। আর মহমেডান হল আই লিগের টিম। দু দলের মধ্যে যে পার্থক্য আছে তা কিন্তু ম্যাচের প্রথম আধ ঘণ্টায় বোঝা যায়নি। মহমেডান তখন একটার পর একটা আক্রমণ করছে মুম্বইকে। এবং সেগুলোকে রুখতে মুম্বই ডিফেন্সকে বাড়তি পরিশ্রম করতে হচ্ছে। আগের ম্যাচগুলিতে মুম্বই অনেক গোল হজম করেছে। ইস্ট বেঙ্গলের কাছেই খেয়েছিল চার গোল। হেরেও ছিল ম্যাচটা। কিন্তু বুধসন্ধ্যায় সল্ট লেক স্টেডিয়ামে তারা অন্য রকম ডিফেন্সিভ অর্গানাইজেশন দেখাল। এর জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে তাদের অধিনায়ক এবং সেন্টার ব্যাক মোর্তাদা ফলকে। আগের পাঁচটি ম্যাচে ফল খেলেননি চোট থাকায়। এদিনই প্রথম নামলেন এবং নেতৃত্ব দিলেন দলের ডিফেন্সকে।মহমেডান অধিনায়ক এবং আক্রমণের প্রধান কাণ্ডারী মার্কাস জোশেফকে ফণা তুলতে দেননি ফল। তবে তারও মধ্যে জোশেফ চেষ্টা করে গেছেন। কিন্তু সতীর্থদের কাছ থেকে তেমন সাহায্য পাননি। প্রথম আধ ঘন্টার ঝড় ঝাপ্টা সামলে মুম্বই ধীরে ধীরে ম্যাচের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে। আপ ফ্রন্টে তাদের তিন ফরোয়ার্ড স্কটল্যান্ডের গ্রেগ স্টূয়ার্ট এবং দুই ভারতীয় বিপিন সিং ও ছাংতে সারাক্ষণ ঢুঁ মেরে গেছেন মহমেডান ডিফেন্সে। বিরতির পর গ্রেগ স্টূয়ার্ট তো একবার গোল করেই ফেলছিলেন। সামনে শুধু গোলকিপার মাইয়াকে পেয়েও তিনি তাঁকে হার মানাতে পারেননি। মাঝ মাঠে মুম্বইয়ের আহমেদ জোসু অন্য দিনের মতো এদিনও সচল ছিলেন। মহমেডান যে ৯০ মিনিট পর্যন্ত গোল না খেয়ে থাকল তার পিছনে অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে হবে তাদের দুই বিদেশি ডিফেন্ডার সিরিয়ার শাহির শাহিন এবং সেনেগালের আউসমান এনডিয়ের জন্য। শাহিনের উচ্চতা ছয় ফুট পাঁচ ইঞ্চি। আর এনডিয়েও বেশ লম্বা। উপরের বলে তাঁরা দুজন খাপ খুলতে দেননি মুম্বই ডিফেন্ডারদের।
তবু তাদের গোল খেতে হল। ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ের দিকে ঢলে পড়ছে তখনই গোলটা খেয়ে গেল মহমেডান গ্রেগ স্টূয়ার্ট বলটা ঠি জায়গায় রেখেছিলেন ছাংতের জন্য। ডান দিকে তখন লেফট ব্যাক অভিষেক আম্বেকর জায়গায় ছিলেন না। ছাংতে বিনা বাঁধায় বক্সে ঢুকলেন। সামনে শুধু গোলকিপার। কিন্তু নিজে না মেরে আরও নিশ্চিত করে স্কোয়ার পাসে বলটা রাখলেন বিপিন সিংয়ের জন্য। ফাঁকা গোলে আলতো পুশ করে ম্যাচের ফয়সালা করে দিলেন মণিপুরী উইঙ্গার।