কলকাতা: কাউকে সফল হতে দেখতে কী ভালোই না লাগে। কিন্তু সেই সাফল্যের নেপথ্যে কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ, সংকল্প, কষ্টের কথা অজানাই থেকে যায়। এমসিজি-র (MCG) ৮০,০০০ দর্শকের সামনে টেস্ট কেরিয়ারের প্রথম শতরান করেছেন নীতীশ কুমার রেড্ডি (Nitish Kumar Reddy)। সেই মুহূর্তকে উচ্ছ্বাসে, আনন্দাশ্রুতে উপভোগ করেছেন গর্বিত পিতা। অথচ একটা সময় ছিল, যখন দুঃখে কষ্টে চোখের জল পড়ত তাঁর। সেই চোখের জলই গড়েপিটে তৈরি করেছে আজকের নীতীশকে।
নীতীশ যখন আট নম্বরে ব্যাট করতে নামলেন ভারত তখন ১৯১ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছে। ফলো অন বাঁচানোর আগেই অল আউট হওয়ার আতঙ্ক গ্রাস করেছে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) ড্রেসিং রুমকে। আগুন ঝরাচ্ছেন প্যাট কামিন্স (Pat Cummins), স্পিনের জাল বুনছেন নাথান লায়ন (Nathan Lyon)। ২১ বছরের তরুণ ঘাবড়ালেন না। জীবনের পিচে এর থেকে ঢের কঠিন পরিস্থিতি দেখেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: স্টুপিড! পন্থের উইকেট ছুড়ে দেওয়ায় ক্ষিপ্ত গাভাসকর
পরিণত মস্তিষ্কের পরিচয় দিলেন নীতীশ। ওয়াশিংটন সুন্দরের যোগ্য সঙ্গতে ভারতকে লড়াইয়ের জায়গায় আনলেন। ১৭৫ বলে অপরাজিত ১০৫ করলেন। গোটা এমসিজি উঠে দাঁড়িয়ে কুর্নিশ জানাল তরুণ যোদ্ধাকে। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন, মুতায়ালা রেড্ডির (Mutayala Reddy) অনুভূতি একমাত্র তিনি ছাড়া কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।
ছেলেকে ক্রিকেটার করে তোলার জন্য প্রচুর ত্যাগ করেছেন মুতায়ালা। এমনকী ভালো চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। নীতীশ নিজেই জানিয়েছেন, “সত্যি বলতে কম বয়সে আমি ততটা সিরিয়াস ছিলাম না। আমার বাবা চাকরি ছেড়ে দেন এবং আমার গল্পের নেপথ্যে অনেক ত্যাগ রয়েছে। আর্থিক সমস্যার জেরে বাবাকে চোখের জল ফেলতে দেখেছি। সেটা দেখে আমার মনে হয়েছিল, আমার বাবা আত্মত্যাগ করছেন আর আমি স্রেফ মজার জন্য ক্রিকেট খেলছি, এটা হতে পারে না। সেই সময় আমি সিরিয়াস হলাম এবং আমার উন্নতি হল।”
নীতীশ আরও বলেন, “মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হিসেবে আমি এখন অত্যন্ত গর্বিত যে আমার বাবা খুশি। আমার প্রথম জার্সি তাঁকেই দিয়েছিলাম, তাতে তাঁর মুখে যে খুশি ফুটে উঠেছিল তা দেখে গর্ব হয়েছিল।”
দেখুন অন্য খবর: