শীতকাল (Winter) মানেই শুষ্ক আবহাওয়া। এই সময় আপনার ত্বক (skin) থেকে চুল সব কিছুই একটু বেশি যত্ন চায়। যত্নের অভাবে চুল (Hair) রুক্ষ, প্রাণহীন ও নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। ফলে দেখতে খুব খারাপ লাগে। বর্তমান সময় কাজের চাপে চুলের যত্ন হয়তো সব ঠিক ভাবে নেওয়া সম্ভব হয় না। তাও নিজেকে সুন্দর রাখার জন্য কিছুক্ষণ সময় বের করা যেতে পারে। চুলের সঠিক যত্ন (Hair care) নিলে চুল থাকবে মসৃণ, ঝলমলে এবং স্বাস্থ্যকর।
১. তেল ম্যাসাজ
শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার অভাব থাকে, যা চুলকে শুষ্ক করে তোলে। চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার চুলে তেল ম্যাসাজ করুন। তেল হালকা গরম করে মাখতে পারলে খুব ভালো। তবে সারা রাত ধরে তেল মেখে কখনই থাকবেন না।
শ্যাম্পু করার আধঘণ্টা আগে তেল মাথায় ভালো করে মেখে ঘরের যাবতীয় কাজ সারতে পারেন। তার পর কোনও ভালো কোম্পানির শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন। দেখবেন যেন চুলে যেন কোনও ভাবে শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার লেগে না থাকে। তার নরম তোয়ালে দিয়ে চুল হালকা করে মুছে তার পর সিরাম লাগিয়ে নিতে পারেন। সিরাম চুলের গোড়ায় লাগাবেন না। নিয়মিত তেল ম্যাসাজ চুলের গোড়াকে মজবুত করে।
আর একটা কথা যেদিন শ্যাম্পু করবেন সেদিন আপনার চিরুণী ও বালিডের কভার ভালো করে সাবান জলে ধুয়ে নেবেন।
২. গরম জলের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন
গরম জল চুলের প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয়, ফলে চুল আরও রুক্ষ হয়। হালকা গরম বা ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। চুল ধোয়ার পর চুল মুছতে নরম তোয়ালে ব্যবহার করুন। রোদে দাঁড়িয়ে চুলের মধ্যে বিলি কেটে চুল শুকিয়ে নিন। ভিজে চুল কখনই আঁচড়াবেন না। এতে চুল ছিড়ে যাবে।
৩. চুল অনুযায়ী শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার বেছে নিন
শীতকালে চুলের জন্য মাইল্ড বা হাইড্রেটিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। চুল ধোয়ার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এতে চুল নরম থাকে। প্রাকৃতিক উপাদানযুক্ত কন্ডিশনার বা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। যাদের চুলে কালার বা স্মুথনিং করা আছে, তারা বিশেষজ্ঞের পরামর্শের মতো শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
৪. ডিপ কন্ডিশনিং করুন
প্রতি সপ্তাহে একবার চুলে ডিপ কন্ডিশনিং করুন। দই, মধু এবং ডিম মিশিয়ে প্রাকৃতিক হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন। এটি চুলে পুষ্টি জোগায় এবং রুক্ষতা কমায়।
৫. চুল ঢেকে রাখুন
ঠান্ডা বাতাস চুলের ক্ষতি করতে পারে। বাইরে বের হলে স্কার্ফ বা টুপি দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। এতে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং শুষ্ক বাতাস থেকে রক্ষা পায়।
আরও পড়ুন-শীতের নিঃশ্বাসে বিষ, পাতে এক কুচি আমলকি উজ্জ্বলতা বাড়াবে ত্বক, চুলে
৬. সুষম আহার
সুস্থ চুলের জন্য ভেতর থেকে পুষ্টি পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে খাবারে প্রোটিন, ভিটামিন এ এবং ই যুক্ত খাবার রাখুন। পর্যাপ্ত জল পান করুন এবং ফল, বাদাম ও সবুজ শাকসবজি খান। নিজের পছন্দ মতো ফলের রস খেতে পারেন।
৭. হেয়ার হিটিং যন্ত্র ব্যবহার কমান
শীতকালে চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা কম থাকে, ফলে স্ট্রেটনার, কার্লার বা ব্লো-ড্রায়ার ব্যবহারে চুল আরও শুষ্ক হতে পারে। প্রয়োজন ছাড়া হিটিং যন্ত্র ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। হিট প্রোটেক্টেন্ট সিরাম ব্যবহার করুন যদি ব্যবহার করতেই হয়। পার্লারে গিয়ে হেয়ার স্পা করালেও হিট দিতে বারণ করবেন।
৮. চুল ডগা কাটুন
শীতকালে চুলের ডগা বেশি ভেঙে যায়। প্রতি মাস বা তিন মাস বা ছয় মাস অন্তর চুলের ডগা ট্রিম করে নিন। এতে চুলের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং ডগা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
দেখুন অন্য খবর-