হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিল হল সুন্দরবন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা মন্দিরবাজারের বিধায়ক জয়দেব হালদারের ছেলে সুদীপ হালদারের। ২০১৮ সালে মৌরলতলা স্কুলে গ্রুপ সি পদে কাজে যোগদান করেন সুদীপ। শুক্রবার হাইকোর্টের রায় বেরোনোর পরই কমিশনের প্রকাশিত চাকরি বাতিলের তালিকায় নাম আসে বিধায়ক পুত্রের। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ বিধায়ক জয়দেব হালদার সহ সহ তাঁর ছেলে। বিধায়ক পুত্রের চাকরি হারানোয় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
অন্যদিকে ভুয়ো চাকরির নামের তালিকায় উঠল মন্ত্রীর ভাই। হাইকোর্টের নির্দেশর পর এসএসসি গ্রুপ সি-এর তরফে যে ভূয়ো চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে নাম রয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহতোর ভাই খোকন মাহাতোর নাম। তিনি চাকরি করতেন ঝাড়গ্রামের বৈতাগোপাল হাই স্কুলে। যা নিয়ে ফের শাসকদলের উপর আঙুল তুলছে বিরোধীরা। শিক্ষামন্ত্রী জেলে যাওয়ার পর থেকেই একের পর এক তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে পার্থ ঘনিষ্ট একাধিক তৃণমূল নেতাদের পরিবারের সদস্যদের নাম সামনে উঠে আসছ। এর জেরে চাপে পড়েছে শাসক শিবির।
ভাইয়ের চাকরি চলে যাওয়া নিয়ে শ্রীকান্ত মাহাতো জানান, এটা এসএসসির ভুল। ভাই যখন চাকরি পেয়েছিল, তখন আমি মন্ত্রী ছিলাম না। যারা অনিয়ম করে চাকরি পেয়েছে তাদের চাকরি যাওয়া উচিত।
এদিকে শুক্রবারও চাকরি বাতিলের তালিকায় নাম ওঠে প্রাক্তন বিধায়ক ও বর্তমান বিজেপি (BJP) নেতার মেয়ের নাম। বৃহস্পতিবারই গ্রুপ সি (Group C) নিয়োগ বাতিলের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে৷ তাতে নাম রয়েছে বাগদার একাধিক ব্যক্তির৷ সেই তালিকায় বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা দুলাল বরের মেয়ে বৈশাখী বরের নাম থাকায় তা নিয়ে তৃণমূল (TMC) প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে৷ তৃণমূল নেতা সঞ্জিত সর্দার বলেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে দুলাল বর মিডলম্যান হিসেবে কাজ করেছেন। ধৃত চন্দন মণ্ডলের (Chandan Mondal) সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি অনেককে চাকরি দিয়েছেন। নিজের মেয়েকেও যে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন, তা আজ প্রমাণিত হল। তিনি আরও বলেন, চন্দন সিপিএম করতেন। আর দুলাল বর ছিলেন কংগ্রেস সিপিএম জোটের বিধায়ক৷ দুলালকে সিবিআই এবং ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করলে কংগ্রেস ও সিপিএমের অনেক নেতার নাম উঠে আসবে৷
প্রসঙ্গত, যাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাঁদের সবারই যে নম্বর বাড়ানো হয়েছে, এমনটা নয়। অনেকের ক্ষেত্রে নম্বর কমানোও হয়েছে। ওএমআর শিটে (OMR Sheet)বেশি নম্বর থাকলেও সার্ভারে কম নম্বর দেওয়া হয়েছে। এই নম্বর কারচুপির বিষয়টি স্কুল সার্ভিস কমিশনই আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল। সেই রিপোর্ট দেখে অবাক হয়ে যান হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। এরপরই তিনি তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সিবিআই ও এসএসসি এই ওএমআর কারচুপি সংক্রান্ত রিপোর্ট দিয়েছিল আদালতে। সেখানে গাজিয়াবাদ থেকে ৩ হাজার ৪৭৮ টি ওএমআর উদ্ধার হয়। এর মধ্যে ৩০০ টি ওএমআর বিকৃত করা হয়নি বলে জানানো হয়। বাকি ওএমআর ৯ মার্চ প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো বৃহস্পতিবার তালিকা প্রকাশ হয়।