বগটুই: বীরভূমের বগটুই গ্রামে পৌঁছল কেন্দ্রীয় অনুসন্ধান কমিটির ছয় সদস্যের দল। শনিবার বেলা এগারোটা নাগাদ পাটনা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি নরসিমা রেড্ডির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল প্রথমে বীরভূম কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সিউড়ির প্রধান কার্যালয়ে পৌঁছয়। সেখানে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের বিষয়গুলি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে তাঁরা রওনা দেন রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে। বেলা ১ টা নাগাদ ওই প্রতিনিধিরারা বগটুই গ্রামে আসেন। তাঁরা কথা বলেন নিহতদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে।
২০২২ সালের ২১ মার্চ রাতে খুন হন স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। তারপরই গ্রামে ব্যপক তাণ্ডব চালায় ভাদু শেখের অনুগামীরা। গ্রামের একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। পরের দিন সোনা শেখ নামে একজনের বাড়ি থেকে মহিলা, পুরুষ ও শিশু মিলিয়ে সাত জনের পোড়া দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও দমকল। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় আরও তিন জনের। সেই ঘটনা নিয়ে রাজ্য জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এই ঘটনা বলে মেনে শাসকদলও। যদিও ঘটনার পরই তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেছিলেন, টিভির কেবল থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে। বড় কিছু ঘটনা নয়।
আরও পড়ুন:Nisith Pramanik: কেন্দ্রীয়মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের উপর হামলার অভিযোগ
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বগটুই কাণ্ডের তদন্ত শুরু করে সিবিআই। সেই তদন্ত এখনও চলছে। ঘটনার দিন পাচেক পরেই ওই গ্রামে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ঘটনায় প্রধান অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের রামপুরহাট ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী অকুস্থলে দাঁড়িয়েই পুলিশকে নির্দেশ দেন, যেখান থেকে হোক আনারুলকে গ্রেফতার করতে হবে। তার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ আনারুলকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীকালে সিবিআইয়ের হাতে আরও অনেকে গ্রেফতার হয়। ঘটনার প্রায় ৯ মাস পর গত ৪ ডিসেম্বর ঝাড়খন্ড থেকে সিবিআই গ্রেফতার করে বগটুই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখকে। তার দিন সাতেকের মধ্যেই সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে লালন শেখের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে ফের আলোড়ন পড়ে। লালনের পরিবারের দাবি, সিবিআই হেফাজতে অত্যাচারের কারণেই মৃত্যু হয় তাঁর। সিবিআইয়ের দাবি, লালন আত্মহত্যাই করেছেন। এই ঘটনা নিয়ে এখনও হাইকোর্টে মামলা চলছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও কেন্দ্র প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল। তখন তার বিরোধিতা করে শাসকদল। শনিবার আবার এল কেন্দ্রীয় অনুসন্ধানকারী দল। এই প্রতিনিধিরা দিল্লিতে ফিরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের রিপোর্ট দেবে।