কলকাতা: পর্যটক টানতে নতুন সাজে দার্জিলিং রোপওয়ে (Darjeeling Ropeway)। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ফের পুরোনো রুটে রোপওয়ে সার্ভিস চালু করতে চায় রাজ্য সরকার। পাহাড়ে পর্যটন শিল্পের(Tourism Industry) অন্যতম আকর্ষণ দার্জিলিং রোপওয়ে। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, দার্জিলিংয়ের ঐতিহ্যবাহী ওই রোপওয়ে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে ফের চালু করতে। পাশাপাশি, যাত্রীদের নিরাপত্তার দিকে নজর দেওয়া হবে।
দার্জিলিংয়ে যারা বেড়াতে তাদের অনেকেই পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে রোপওয়েতে ওঠেন। সেখান থেকে শৈল শহরকে খুব সুন্দর ভাবে দেখা যায়। শুধু বাইরের পর্যটকরাই নয়, যাতায়াতের জন্যও দার্জিলিংয়ের বাসিন্দারা এক সময় রোপওয়ে ব্যবহার করতেন। ১৯৬৮ সালে রাজ্য বন দফতরের উদ্যোগে দার্জিলিংয়ের চকবাজার থেকে সিংলাবাজারের মধ্যে প্রথম এই রোপওয়ে সার্ভিস চালু হয়। পরবর্তীকালে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভলপমেন্ট সার্ভিস-এর হাতে। শুরুর দিকে সিঙ্গল ট্র্যাক জিগ ব্যাক সিস্টেমে এই রোপওয়ে চলতো। ১৯৯৫-‘৯৬ সালে পুরোনো সিস্টেম বদলে মনোমেবল গন্ডোলা সিস্টেম চালু হয়। কিন্তু ২০০৩ সালে দার্জিলিংয়ে রোপওয়ে ছিঁড়ে চার পর্যটকের মৃত্যু হলে প্রায় আটবছর সেই সার্ভিস বন্ধ ছিল। ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নতুন করে এই পরিষেবা চালু হয়। তাতে পুরোনো রুট কিছুটা কাটছাঁট করা হয়। আপাতত যে রুটে রোপওয়ে চলছে তার দূরত্ব মাত্র ২.৩ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন:দার্জিলিংয়ের সেরা চা’য়ের ডেস্টিনেশন
বনদফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, দার্জিলিংকে আরও পর্যটকবান্ধব করে তুলতে বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরোনো রুটে আবার নতুন করে রোপওয়ে সার্ভিস চালু করা হবে। তার জন্য কোনও বেসরকারি এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। বনদফতরের প্রস্তাব অনুযায়ী, দার্জিলিংয়ে যে পুরোনো রোপওয়ে রুট ছিল, সেটিকে আমূল সংষ্কার করা হবে। তৈরি হবে নতুন টার্মিনাল। মধ্যবর্তী স্টেশনের সংখ্যাও বাড়বে। যাত্রীদের জিনিসপত্র রাখার জন্য বানানো হবে ক্লক রুম। পর্যটকদের সুবিধার্থে গাড়ি পার্কিংয়েরও ব্যবস্থা থাকবে। তবে এবার দার্জিলিংয়ের রোপওয়ে নতুন ভাবে চালু রাখার ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে যাত্রী নিরাপত্তার ওপর। দার্জিলিং যেহেতু ভূকম্পপ্রবণ এলাকা তাই যথাযথ সমস্ত সুরক্ষা বিধি মেনে রোপওয়ের পিলারগুলি বানানো হবে। রোপওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় মাঝপথে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে তাড়াতাড়ি যাত্রীদের নামিয়ে আনা যায় তার জন্য বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা থাকবে। তার জন্য অবশ্য প্রশিক্ষিত কর্মীদেরও নিয়োগ করা হবে।